জিএসটি বিল পাশ হলে ছুটতে পারে শেয়ার সূচক

জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছিল ভাল-মন্দে মেশানো। তবে ভালর পাল্লাটা বোধহয় একটু ভারী। বর্ষার মেঘের চাদরে ভারতের আকাশ ঢেকেছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই কমেছে ঘাটতি। আকাশের এই আশীর্বাদ সারা দেশের জন্য অত্যন্ত ভাল।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০২:১২
Share:

জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছিল ভাল-মন্দে মেশানো। তবে ভালর পাল্লাটা বোধহয় একটু ভারী। বর্ষার মেঘের চাদরে ভারতের আকাশ ঢেকেছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই কমেছে ঘাটতি। আকাশের এই আশীর্বাদ সারা দেশের জন্য অত্যন্ত ভাল। বিভিন্ন আশায় ভর করে শেয়ার সূচকও ধরে রেখেছে তেজী ভাব।

Advertisement

শুক্রবার শেষ বেলায় কিছুটা নামলেও, সে দিন সেনসেক্স এক সময় পেরিয়েছিল ২৮ হাজারের গণ্ডি। উঠেছিল এক বছরে সর্বোচ্চ জায়গায়। পাশাপাশি, বাজার পেয়েছে ১৮ মাসে প্রথম রফতানি বৃদ্ধির খবর। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে একনাগাড়ে কমার পরে, জুনে তা ১.২৭% বেড়ে হয়েছে ২,২৫৭ কোটি ডলার। যা অর্থনীতির পক্ষে সুসংবাদ। একই মাসে আমদানি ৭.৩৩% কমে হয়েছে ৩,০৬৮ কোটি। কয়লা, পেট্রোপণ্য, রাসায়নিক সার ও সোনা-সহ আমদানি কমেছে বেশ কিছু পণ্যের। এপ্রিল-জুনে বাণিজ্য ঘাটতি ৩,২২২ কোটি থেকে নেমেছে ১,৯২৩ কোটিতে। ব্রেক্সিটের প্রাথমিক ধাক্কার পরে কিছুটা তেজী ভাব দেখা গিয়েছে বিশ্বের অন্যান্য বাজারেও।

এ দিকে, বাদল অধিবেশনের প্রাক্কালে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির নেতৃত্বে সরকারি মহল জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে পণ্য-পরিষেবা বিলে (জিএসটি) কংগ্রেসের সায় পেতে। সফল হলে তা এই অধিবেশনেই উতরোতে পারে। আর জিএসটি বিল পাশ হলে তা বাড়তি শক্তি পাবে বাজার। শুধু এই ঘটনাই সেনসেক্সকে পার করাতে পারে ৩০ হাজারের মাত্রা।

Advertisement

তিন হেভিওয়েটকে দিয়ে শুরু হয়েছে ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের প্রথম ফলাফলের মরসুম। প্রথম তিন মাসে টিসিএসের আয় ৩% বাড়লেও, লাভের মার্জিন নেমেছে গত সাত বছরে সবচেয়ে নীচে। সংস্থার আয় হয়েছে ২৯,৩০৫ কোটি টাকা। আগের তিন মাসের তুলনায় নিট লাভ ০.৪% কমে হয়েছে ৬,৩১৭ কোটি। জুনের শেষে তাদের কর্মী সংখ্যা ছিল ৩.৬২ লক্ষ। খুব ভাল ফল প্রকাশ করেনি ইনফোসিসও। আগের তিন মাসের তুলনায় আয় ১.৪% বেড়ে ১৬,৭৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। নিট লাভ ৪.৫% কমে নেমেছে ৩৪৩৬ কোটিতে। আগের বছর একই সময়ের তুলনায় অবশ্য সংস্থার ফল ভালই হয়েছে। দেশের অগ্রণী দুই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ফল খুব খারাপ না-হলেও, তাতে খুশি নন লগ্নিকারীরা। ফলে শুক্রবার দাম পড়েছে এই দুই শেয়ারের।

একই সপ্তাহে অবশ্য ভাল ফল প্রকাশ করেছে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। আয় ১১,০৫৮ কোটি টাকা কমেছে। কিন্তু নিট লাভ ১৮% বেড়ে হয়েছে ৭,১১৩ কোটি। তাদের শেয়ারের দর এখন হাজার টাকার উপরে।

মারুতি সুজুকি-র বিক্রি কমলেও, জুনে দেশে সব রকমের গাড়ি বিক্রি বেশ বেড়েছে। চাহিদা বাড়ছে ফ্ল্যাটেরও। এই দুই শিল্পে চাহিদা বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় অর্থনীতির চাকা ঘোরার। এগুলির উৎপাদন বাড়লে উপকৃত হবে আরও বেশ কিছু শিল্প। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল জুনে গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান।

গত সোমবার বিএসই মিড ক্যাপ সূচক প্রথমবার ১২ হাজারের মাত্রা টপকেছে। বহু মাঝারি মাপের শেয়ার ছাড়াও বেড়েছে মিড ক্যাপ ফান্ডগুলি। একই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বিএসই স্মল ক্যাপ সূচকও। গত ২-৩ মাস শেয়ার বাজারে তেজী ভাব থাকায় এনপিএস-এর ইকুইটি বিকল্প আবার লাভের খাতায় ফিরেছে। শেয়ার বাজারে প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রথম লগ্নিও দেখেছে লাভের মুখ। সব মিলিয়ে ভাল লাগার ভাব বিরাজ করছে এখন সকলের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন