বছরে ২০ লক্ষ টাকার বেশি ব্যবসা জিএসটি-র আওতায়

দু’দিনের বৈঠকে দড়ি টানাটানি হল। কিন্তু শেষমেশ সিদ্ধান্তে পৌঁছনো গেল ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ঠিক হল, বছরে ব্যবসার অঙ্ক ২০ লক্ষ টাকার বেশি হলে, তবেই তা পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) আওতায় আসবে। এ রাজ্যেও তা-ই। উত্তর-পূর্ব ভারত সমেত ১১টি ছোট রাজ্যে ওই অঙ্ক কম, ১০ লক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৬
Share:

শুক্রবার বৈঠক শেষে অরুণ জেটলি ও অমিত মিত্র।-পিটিআই

দু’দিনের বৈঠকে দড়ি টানাটানি হল। কিন্তু শেষমেশ সিদ্ধান্তে পৌঁছনো গেল ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ঠিক হল, বছরে ব্যবসার অঙ্ক ২০ লক্ষ টাকার বেশি হলে, তবেই তা পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) আওতায় আসবে। এ রাজ্যেও তা-ই। উত্তর-পূর্ব ভারত সমেত ১১টি ছোট রাজ্যে ওই অঙ্ক কম, ১০ লক্ষ। ব্যবসা দেড় কোটি টাকার কম হলে, তার উপর নজরদারির এক্তিয়ার শুধু সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হবে বলেও ঠিক হয়েছে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে। এই শক্ত পরীক্ষা পেরোনোর পরে আগামী ১৭-১৯ অক্টোবরের বৈঠকে এ বার ওই করের হার ও কাঠামো ঠিক হওয়ার পালা। যা ঘিরে মতানৈক্য প্রবল। তাতেও উতরে গেলে, ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি-জমানা শুরুর সম্ভাবনা থাকবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

Advertisement

পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রের দাবি ছিল, বছরে ২৫ লক্ষ টাকার পর্যন্ত ব্যবসা জিএসটি-র আওতার বাইরে থাকুক। কিন্তু অনেক রাজ্য তাতে আপত্তি তোলে। চাপ দেয় তা কমাতে। শেষমেশ ২০ লক্ষের সীমা বাঁধা হয়। ১১টি ছোট রাজ্যের জন্য তা ঠিক হয় ১০ লক্ষ টাকা। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ভাবে নথিভুক্ত ২.৬৫ লক্ষ ব্যবসায়ী ও ডিলারের মধ্যে ১.৩৮ লক্ষ জিএসটি-র আওতায় পড়বেন না। দিতে হবে না পণ্য-পরিষেবা কর।

এখন এ রাজ্যে ভ্যাট বা বিক্রয় করে ছাড়ের সীমা ১০ লক্ষ টাকা। জিএসটি-র আওতা ২০ লক্ষ থেকে শুরু হওয়ায় বাড়তি ২৩ হাজার ব্যবসায়ী ও ডিলার করের আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর অবশ্য দাবি, এতে মাত্র ০.৩৭% রাজস্ব ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, ‘‘ওই কর আদায়ের খরচ তা থেকে আয়ের তুলনায় বেশি।’’

Advertisement

এমসিসি চেম্বারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট অরুণ শরাফ বলেন, ‘‘এতে কিছু ছোট ব্যবসায়ী উপকৃত হতে পারেন। কিন্তু সার্বিক ভাবে করের বোঝা কমলে তবেই জিএসটি জমানায় লাভবান হবে ছোট-মাঝারি শিল্প।’’ তাঁর এবং ফসমি-র প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, এখন কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্কে ছোট-মাঝারি শিল্প বছরে দেড় কোটি টাকা ব্যবসায় ছাড় পায়। বিশ্বনাথবাবুও বলেন, শুধু ২০ লক্ষ টাকা ছাড় পেলে তাই ছোট-মাঝারি শিল্পের খুব একটা লাভ হবে না।

শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির নেতৃত্বে পরিষদের বৈঠকে ঠিক হয়, দেড় কোটি টাকার কম ব্যবসায় শুধু রাজ্যের নজরদারি থাকবে। ছোট ব্যবসায়ীদের কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়েরই কর অফিসারদের চোখরাঙানির ভয় পেতে হবে না। কিন্তু দেড় কোটির বেশি ব্যবসা হলে, দু’তরফেরই নজরদারি থাকবে। তবে ব্যবসা ও কর আদায়ের কাগজ রাজ্য পরীক্ষা করলে, সেখানে কেন্দ্র নাক গলাবে না। যেখানে কেন্দ্র প্রথমে যাবে, সেখানে আবার রাজ্য ঢুকবে না। ফলে যৌথ নজরদারি সত্ত্বেও হেনস্থা হওয়ার সম্ভাবনা কম। পরিষেবা করের পুরোটাই অবশ্য কেন্দ্রের নজরদারিতে থাকবে। জিএসটি চালু হলে রাজ্যগুলির প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে ফের আলোচনা হওয়ার কথা ৩০ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement