সংসদে সব বিলই পাশ হয়ে গিয়েছে। তাই ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করতে আর বাধা নেই বলেই দাবি করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু মঙ্গলবার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের যুক্তি, এটা ‘অবাস্তব ও অনাকাঙ্ক্ষিত’। বরং ১ অক্টোবর থেকে তা চালু করা হোক।
শিল্পমহল ও ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যেও ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষত ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প এ বিষয়ে চিন্তিত। সেই আশঙ্কা তুলে ধরেই চিদম্বরমের যুক্তি, ‘‘লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থাকে নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তাদের অনেকের কাছেই জিএসটি আইন মেনে চলার মতো দক্ষতা বা পেশাদার কর্মী নেই।’’ চিদম্বরমের মতে, ১ অক্টোবর থেকে তা চালু হলে শিল্পমহল, ও ব্যবসায়ীরা নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সময় পাবেন।
তবে বড় শিল্প জিএসটি নিয়ে তেমন শঙ্কিত নয়। যেমন, আদি গোদরেজ মনে করেন, এ জন্য বাড়তি সময় নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এ দিন গোদরেজের মন্তব্য, ‘‘জিএসটি নিয়ে যাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, তাঁরা মূলত কর ফাঁকি দেন। তা ছাড়া প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর মতো অনেকেই জিএসটি অক্টোবরে পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। কিন্তু তার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
অর্থ প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার অবশ্য আজ সংসদে যুক্তি দিয়েছেন, জিএসটি নেটওয়ার্ককে শক্তপোক্ত ও তার নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। চিদম্বরমের যুক্তি খারিজ করে নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগাড়িয়া পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, জিএসটি-র শুরুতে সমস্যা হলেও সময়ের সঙ্গে তা কেটে যাবে। পানাগাড়িয়া বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, নতুন ব্যবস্থা সরকার ও শিল্পমহল, দু’তরফের জন্যই চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এতদিন সকলে অভিযোগ তুলছিল, কেন জিএসটি চালু হচ্ছে না। এখন তারা বলছে, আরও পিছোনো হোক। আমার মনে হয়, নির্দিষ্ট দিনেই জিএসটি চালু করে দেওয়া উচিত।’’
জিএসটি-তে স্বল্প মেয়াদে হলেও মূল্যবৃদ্ধি চড়া হবে বলে আশঙ্কা জানান চিদম্বরম। তাঁর যুক্তি, যদি ৭০% পণ্য-পরিষেবায় ১৮% কর বসে, তবে মূল্যবৃদ্ধির চাপ বেশি দিন থাকবে না। কিন্তু যত বেশি পণ্যে ১৮ শতাংশের বেশি কর চাপবে, মূল্যবৃদ্ধির প্রকোপ ততই দীর্ঘায়িত হবে।