সংস্কারে গাফিলতির অভিযোগ জেটলির

উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব বাড়েনি আইএমএফে

ভারত-সহ গোটা উন্নয়নশীল দুনিয়ার প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ) সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২০১০ সালেই। কিন্তু আইএমএফ পরিচালনায় সেই সংস্কার আদৌ রূপায়িত হয়নি বলে অভিযোগ আনলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আইএমএফের ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল কমিটির বৈঠকে আমেরিকা সফররত জেটলি বলেন, ‘‘আমরা চরম হতাশ যে, বিশ্ব জুড়ে সমর্থন থাকা সত্ত্বেও বিষয়টি একচুলও এগোয়নি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৮
Share:

ভারত-সহ গোটা উন্নয়নশীল দুনিয়ার প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ) সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২০১০ সালেই। কিন্তু আইএমএফ পরিচালনায় সেই সংস্কার আদৌ রূপায়িত হয়নি বলে অভিযোগ আনলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

Advertisement

আইএমএফের ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল কমিটির বৈঠকে আমেরিকা সফররত জেটলি বলেন, ‘‘আমরা চরম হতাশ যে, বিশ্ব জুড়ে সমর্থন থাকা সত্ত্বেও বিষয়টি একচুলও এগোয়নি।’’ কিন্তু বিষয়টি যে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেওয়া যায় না, সে কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন জেটলি। যে-সমস্ত দেশ চূড়ান্ত অনুমোদন না-দেওয়ায় এখনও আইএমএফ ২০১০-এর ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারছে না, তাদের দ্রুত বিষয়টিতে সায় দেওয়ার আর্জিও জানান জেটলি।

অবশ্য এর মূল কারণ, মার্কিন কংগ্রেস এখনও বিষয়টিতে সই করতে নারাজ। আইএমএফে আমেরিকার একচেটিয়া আধিপত্য ক্ষুণ্ণ হবে,এই আশঙ্কাতেই আইএমএফ সংস্কারে নারাজ মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য।

Advertisement

প্রসঙ্গত, আইএমএফ পরিচালন পর্ষদ ২০১০-এ এই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার পরিচালন ব্যবস্থা ঢেলে সাজার যে প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল, তা কার্যকর হলে এখানে উন্নয়নশীল ও শিল্পে সম্ভাবনাময় দেশগুলির ভোটদানের ক্ষমতা বা ‘কোটা’ ৬ শতাংশেরও বেশি বাড়ার কথা। সে ক্ষেত্রে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এক লাফে অনেকটাই গুরুত্ব বাড়বে ভারত, চিন, ব্রাজিল এবং রাশিয়ার। আইএমএফও জানিয়েছিল, “পরিচালন পর্ষদে ২টি আসন উন্নয়নশীল দুনিয়ার জন্য ছেড়ে দেবে ইউরোপ। ভোট দেওয়ার ক্ষমতা হস্তান্তর হবে অন্তত ৬%।”

বিশ্ব অর্থনীতিতে কোনও দেশের ভাগ কতখানি, মূলত সেটির উপরই নির্ভর করে অর্থভাণ্ডারে তার প্রতিনিধিত্ব। যার উপর আবার নির্ভরশীল তার ভোটদানের ক্ষমতা। ভারত-সহ উন্নয়নশীল দেশগুলির এই ক্ষমতা বাড়াতে এক সময় সরব হন তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বিশ্ব অর্থনীতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির অংশীদারি প্রায় ৪৮%। কিন্তু সেখানে অর্থভাণ্ডারে তাদের প্রতিনিধিত্ব ৩৯.৫% (বাড়লে যা হবে ৪৫.৫%)। তাই দু’য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে ভোটদানের ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তব চিত্র মাথায় রেখেই ‘ক্ষমতা’র এই নতুন বিন্যাসে মত দিয়েছিল আইএমএফ। ভোটদানের ক্ষমতা বাড়লে উন্নয়নশীল দেশগুলির দায়িত্বও যেমন বাড়বে, তেমনই তারা বাড়তি আইএমএফ ঋণ পাওয়ারও যোগ্য হবে।

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আইএমএফ পরিচালনায় সংস্কার প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় তাই সঙ্গত কারণেই ক্ষুব্ধ। তাঁর যুক্তি, বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রমশ গুরুত্ব বাড়ছে উন্নয়নশীল দেশগুলির। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এদের প্রতিনিধিত্ব ও গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়া উচিত অর্থভাণ্ডারে। এমনকী আগামী দিনের কথা মাথায় রেখে এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারলে, তবেই প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাসযোগ্যতা, বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা বজায় থাকবে বলেও দাবি করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন