আর্থিক বৃদ্ধি ৭.৪%, ভারত ফের টপকে গেল চিনকে

চিনকে টপকে ফের বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থনীতির শিরোপা পেল ভারত। এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ ত্রৈমাসিকেও চিনকে দৌড়ে পিছনে ফেলেছিল ভারত। তবে জাতীয় আয় মাপার পদ্ধতিই বৃদ্ধিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে বলে এ বারও অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন, নয়াদিল্লি

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২৭
Share:

চিনকে টপকে ফের বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থনীতির শিরোপা পেল ভারত। এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ ত্রৈমাসিকেও চিনকে দৌড়ে পিছনে ফেলেছিল ভারত। তবে জাতীয় আয় মাপার পদ্ধতিই বৃদ্ধিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে বলে এ বারও অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ৭.৪% আর্থিক বৃদ্ধি ছুঁয়ে চিনের ৬.৯ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেল ভারত। এপ্রিল থেকে জুনে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৭%। তবে গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৮.৪%। মূলত কল-কারখানায় ৯.৩% উৎপাদন বাড়ার উপর ভর করেই জাতীয় আয় এই হারে বেড়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি লগ্নি বেড়েছে ৬.৮%, পরিষেবা ক্ষেত্র ৮.৮%। এই একই ত্রৈমাসিকে রাশিয়ার অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে ৪.১% হারে। ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও উৎপাদন সরাসরি ৪.২% হারে কমবে বলেই পূর্বাভাস।

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতি ভাল না-হওয়া সত্ত্বেও শিল্পোৎপাদন ৯.৩% (আগের ত্রৈমাসিকে যা ছিল ৭.২%) বাড়াটা ‘উল্লেখযোগ্য’। তিনি আশা করছেন আগামী ত্রৈমাসিকগুলিতে বেসরকারি লগ্নিকারীরা উৎসাহিত হবেন। সার্বিক ভাবে চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি গত বারের ৭.৩ শতাংশকে ছাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। তবে অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ কাটার লক্ষণ এখনও স্পষ্ট নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার কারণ, তাঁদের মতে বৃদ্ধি মূলত এসেছে পরিকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে সরকারি লগ্নি বাড়ার হাত ধরে, সাধারণ মানুষের খরচ বাড়েনি। খরচ বাড়ার হার ৬.৮%, যেখানে এপ্রিল থেকে জুনে তা ছিল ৭.৪%। ব্যাঙ্ক ঋণ বাড়া, কর্মসংস্থান, চাহিদা বৃদ্ধির মতো মাপকাঠিতেও অর্থনীতির তেমন উজ্জ্বল ছবি দেখতে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। কিছু এলাকায় খরার কারণে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ২.২% হারে। রাজকোষ ঘাটতি এপ্রিল থেকে অক্টোবরেই ছুঁয়েছে ৪.১১ লক্ষ কোটি টাকা, যা অর্থ বছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার ৭৪%। পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন অক্টোবরে বেড়েছে ৩.২%। সেপ্টেম্বরেও তা একই জায়গায় ছিল। গত বছরের হার ৯%। পাশাপাশি,নতুন হিসেবে জাতীয় আয় মাপা হয় বাজার দরে উৎপাদনের মূল্য হিসেব করে। আগে তা মাপা হত, উৎপাদনের খরচের ভিত্তিতে। উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে করা হিসেবের সঙ্গে পরোক্ষ কর যোগ করে এবং ভর্তুকি বাদ দিলে পাওয়া যায় বাজার দরের ভিত্তিতে জাতীয় আয়। সেই কারণেই এখান থেকে অর্থনীতির প্রকৃত ছবি পাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন অনেকেই।

Advertisement

তবে শিল্পোৎপাদন চড়া হারে বাড়াকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারের সাফল্য হিসেবেই দেখছে শিল্পমহলও।

তবে আর্থিক বৃদ্ধি কিছুটা উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী কাল তার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে সুদের হার অপরিবর্তিতই রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে এ বার তারা বেশি নজর দেবে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার দিকে।

এ দিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, বিনিয়োগ বাড়ানোর আগে তা দেখে নিতে সোমবার থমকে থাকল শেয়ার বাজার। আগের টানা দুই দিনে সেনসেক্স ৩৫২ পয়েন্টেরও বেশি বাড়ার পরে এ দিন পুরো সময় লেনদেনের পরে মাত্র ১৭ পয়েন্ট বেড়েই ক্ষান্ত হল সূচক। বাজার বন্ধের সময়ে তা থিতু হয় ২৬,১৪৫.৬৭ অঙ্কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন