ডাক সেবকদের ধর্মঘট, গ্রামে বন্ধ চিঠি বিলিও

বেতন সংশোধনের দাবিতে দেশ জুড়ে চলছে গ্রামীণ ডাক সেবকদের অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট। আর তার জেরে বিপর্যস্ত এ রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার ডাক পরিষেবাও। রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় সাত হাজার ‘ব্রাঞ্চ অফিস’ (শাখা ডাকঘর) বন্ধ থাকায় দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ গ্রাহক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০২:১৬
Share:

বেতন সংশোধনের দাবিতে দেশ জুড়ে চলছে গ্রামীণ ডাক সেবকদের অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট। আর তার জেরে বিপর্যস্ত এ রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার ডাক পরিষেবাও। রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় সাত হাজার ‘ব্রাঞ্চ অফিস’ (শাখা ডাকঘর) বন্ধ থাকায় দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ গ্রাহক।

Advertisement

ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, স্থায়ী কর্মী না হলেও ব্রিটিশ আমল থেকেই গ্রামীণ এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের গ্রামীণ ডাক সেবক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। এ রাজ্যে এমন সেবকের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। নিয়ম অনুযায়ী বাড়িতে বা দোকানে তিন বা পাঁচ ঘণ্টা এই ডাকঘর পরিষেবা চালানোর কথা থাকলেও তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, বাস্তবে অনেক বেশি সময় পরিষেবা দিতে হয়। কিন্তু ন্যূনতম বেতন মাত্র সাত হাজার টাকা। সপ্তম বেতন কমিশনের আদলে তাঁদের বেতন সংশোধনের জন্য নিযুক্ত কমিশন ২০১৬ সালে রিপোর্ট দিলেও তা কার্যকর হয়নি।

বেতন সংশোধনের দাবিতে বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস সমর্থিত চারটি ইউনিয়ন গত ২২ মে থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট চালাচ্ছে। এর ফলে গ্রামীণ এলাকায় ডাক পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত। ই-মেল বা ফোনের দৌলতে চিঠি-চাপাটির বহর কিছুটা কমলেও ডাকঘরের সেভিংস অ্যাকাউন্ট, জীবন বিমা, ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার, ডাক-পার্সেল ইত্যাদির জন্য গ্রামীণ এলাকার মানুষ পুরোপুরি ওই শাখা ডাকঘরগুলির উপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া রেজিস্টার্ড ও স্পিড পোস্টের চিঠি এখনও ওই সব এলাকায় গুরুত্ব পায়। গ্রামীণ এলাকায় ব্যাঙ্কের সংখ্যা কম হওয়ায় টাকা তোলা ও জমার মতো আর্থিক পরিষেবার জন্যও ডাকঘরগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে ভুগতে হচ্ছে আমজনতাকে।

Advertisement

সমস্যার কথা মানছেন ধর্মঘটী ইউনিয়নগুলির পক্ষে পোস্টাল কোঅর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সম্পাদক জনার্দন পাল এবং এনইউজিডিএসের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ শিকদার। তবে তাঁদের দাবি, দু’বছর ধরে এ নিয়ে কেন্দ্র উচ্চবাচ্য না করায় বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল) অরুন্ধতী ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এ নিয়ে যেহেতু আলোচনা চলছে, তাই ওঁদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ জানাব।’’

জনার্দনবাবু জানান, এক মাসের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তার আশ্বাস এই প্রথম লিখিত ভাবে জানিয়েছে ডাক বিভাগ। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি যাতে বজায় থাকে ও মানুষেরও দুর্ভোগ না হয়, সব দিক খতিয়ে দেখে সব ইউনিয়নগুলিকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে মীমাংসা খুঁজতে হবে।

আপাতত সেই রফাসূত্রের দিকেই তাকিয়ে গ্রাহকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন