এক লাফে ত্রিশ সিঁড়ি টপকে বিশ্বব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে এই প্রথম একশোর গণ্ডিতে পা রাখল ভারত। ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এ বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে তার স্থান দাঁড়াল ১০০তম। যাকে লাগাতার সংস্কারের সুফল হিসেবে দাবি করছেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী উস্কে দিয়েছেন পঞ্চাশের দিকে দৌড় শুরুর স্বপ্ন। কিন্তু বিরোধীরা বলেছেন, সার্বিক নম্বর বাড়ল ঠিকই। কিন্তু চোখে পড়ার মতো উন্নতি তো ১০টির মধ্যে মাত্র ৪টি মাপকাঠিতে। বহু ক্ষেত্রে সঙ্গী বরং পিছিয়ে পড়ার ব্যর্থতা।
প্রশ্ন উঠছে, এই উন্নতিতে কি সত্যিই বেসরকারি লগ্নি বাড়বে? চিন্তা কমবে কাজের সুযোগ তৈরি না-হওয়া নিয়ে? এই পরিসংখ্যান দেশের শিল্প-পতিদের লগ্নির ঝুলি উপুড়ের ইচ্ছে বাড়াবে কি না, প্রশ্ন উঠছে তা ঘিরেও।
গুজরাত ভোটের মুখে এই পরিসংখ্যানে বড়াই করার মতো অস্ত্র পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অরুণ জেটলিরা। বিশেষত বৃদ্ধির হার কমা, জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ ইত্যাদি কারণে কেন্দ্র যেখানে কিছুটা কোণঠাসা। কিন্তু সার্বিক ভাল ফল হলেও ব্যবসা শুরু, নির্মাণের অনুমতি ইত্যাদি মাপকাঠিতে ভারত বিশেষ উন্নতি করতে পারেনি। বরং উল্টে ব্যবসা শুরু, বিদ্যুৎ সংযোগের মতো কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালার কটাক্ষ, ‘‘এটা সিজ অব জুয়িং বিজনেস।’’
আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক আধার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বড় বিপদ: স্বামী
রিপোর্ট বলছে, ব্যবসা শুরুতে ভারত ১৫৫-তম স্থান থেকে ১৫৬-তে নেমেছে। ১৮১-তম স্থানে নির্মাণের অনুমতিতে। অর্থমন্ত্রীর সাফাই, এখন অনলাইনে এক দিনে নতুন সংস্থার নথিভুক্তি সম্ভব। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘নির্মাণের অনুমতি দেয় পুরসভা। সেগুলি রাজ্যের অধীন। তাদের অনুরোধ জানাব নেটে নির্মাণের ছাড়পত্র দিতে।’’ কিন্তু জেটলি বলেননি যে, বিশ্বব্যাঙ্কের সূচক তৈরি হয় দিল্লি ও মুম্বইয়ের পরিস্থিতি বিচারে। যেখানে সব পুরসভা বিজেপি বা তার শরিক দলের দখলে।
বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধাক্কা খাওয়া সত্ত্বেও ভারতের ফল ভাল হওয়ার কারণ মূলত দু’টি। এক, দেউলিয়া বিধি চালু করে রুগ্ণ সংস্থাকে চটজলদি ব্যবসা গোটানোর সুযোগ দেওয়া। দুই, কর ব্যবস্থার সরলিকরণ। জেটলির অবশ্য দাবি, আগামী বছর ঘরে তোলা যাবে জিএসটি চালুর সুফলও।