সহিষ্ণুতাই বৃদ্ধির চাবি, সওয়াল রাজনের

রাজনের যুক্তি, অর্থনীতি যত বেশি করে পরিষেবা ও উদ্ভাবনী চিন্তা-ভিত্তিক হবে, তত বেশি জরুরি হবে সহিষ্ণুতা। কারণ, একমাত্র তবেই বিভিন্ন মতের চকমকিতে উদ্ভাবনের ফুলকির দেখা মিলবে। খোঁজ পাওয়া যাবে নিত্যনতুন ভাবনার। তাঁর দাবি, সারা বিশ্বেই সাধারণত খোলা অর্থনীতি ও সহিষ্ণুতার দেশগুলিতে বৃদ্ধির হার তুলনায় বেশি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৪
Share:

সহাস্য: শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।

উপযুক্ত প্রস্তুতি ছাড়া নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত যে অর্থনীতির পক্ষে বুমেরাং হতে পারে, তা আগেই বলেছেন। এ বার বৃদ্ধির চাকায় গতি বাড়ানোর অন্যতম শর্ত হিসেবে সহিষ্ণুতার প্রসঙ্গও তুলে আনলেন রঘুরাম রাজন।

Advertisement

নিজের বইয়ের প্রচারে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের সামনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বলেন, খোলা ভাবনা, মুক্ত সমাজ আর সহিষ্ণুতা অবশ্যই পোক্ত অর্থনীতির শর্ত। দীর্ঘ মেয়াদে বৃদ্ধির হার চাঙ্গা রাখার চাবিকাঠি।

রাজনের যুক্তি, অর্থনীতি যত বেশি করে পরিষেবা ও উদ্ভাবনী চিন্তা-ভিত্তিক হবে, তত বেশি জরুরি হবে সহিষ্ণুতা। কারণ, একমাত্র তবেই বিভিন্ন মতের চকমকিতে উদ্ভাবনের ফুলকির দেখা মিলবে। খোঁজ পাওয়া যাবে নিত্যনতুন ভাবনার। তাঁর দাবি, সারা বিশ্বেই সাধারণত খোলা অর্থনীতি ও সহিষ্ণুতার দেশগুলিতে বৃদ্ধির হার তুলনায় বেশি।

Advertisement

এই মুহূর্তে দেশে তলানিতে ঠেকা বৃদ্ধি যে চিন্তার কারণ, তা গোপন করেননি। বলেছেন, এখন সম্ভাবনাময় জায়গায় দাঁড়িয়ে বিশ্ব অর্থনীতি। চিনের বৃদ্ধি ফের মুখ তুলছে। ভাল করছে ব্রাজিল, রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে তাই ভারতের পিছিয়ে পড়া চিন্তার।

তবে কি নোট নাকচের সিদ্ধান্তই তছনছ করে দিল অর্থনীতির ভাল করার সম্ভাবনাকে? তাতে ফের ঘি ঢালল তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করা? এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেননি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্সের শিক্ষক। তবে বলেছেন, দীর্ঘ মেয়াদে জিএসটিতে লাভ হলেও, শুরুতে তার অনিশ্চয়তা অর্থনীতিকে পিছু টেনেছে। আর, শীর্ষ ব্যাঙ্কের মাথায় থাকাকালীন নোট বাতিলের সুফল-কুফল বিচার করে সরকারকে তা না-করারই পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা অনুযায়ী, নোটবন্দির জেরে জিডিপি ধাক্কা খেয়েছে ১-২%। প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। তাঁর প্রশ্ন, তার বদলে কর আদায় ও ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে কতখানি? নোট বাতিলের লাভ আদৌ তার ক্ষতিকে ছাপিয়ে যেতে পেরেছে? মজা করে বলেছেন, কী ভাবে নোট বদলাতে দেশে ফিরেছিলেন তিনি!

সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে আরও দু’ বছর থাকেননি, তা ফের বলেছেন। জানিয়েছেন, মত না-মিললে পদ ছাড়তেই পারেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর। আর মুচকি হেসে বলেছেন, ‘‘প্রিয় সিনেমা দ্য গ্রেট ডিক্টেটর।’’ কারণ তাঁর মতে, একনায়কের ঔদ্ধত্য ভাঙতে ঠাট্টার জুড়ি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন