খবরটা ছড়াতে শুরু করেছিল সকাল হতেই। শেয়ার বাজার খোলার বেশ খানিকটা আগে। পুলওয়ামার প্রত্যাঘাত হিসেবে ভোর রাতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। ঘটনার প্রাথমিক আঁচ যখন বিএসই-র অলিন্দে আছড়ে পড়ল তখন ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছুঁয়েছে। এক ধাক্কায় ৫০০ পয়েন্ট তলিয়ে গেল সেনসেক্স। যদিও পরের দিকে সেই পতন বেশ কিছুটা সামাল দেয় বাজার। দিনের শেষে সূচকটি ২৩৯.৬৭ পয়েন্ট খুইয়ে দাঁড়ায় ৩৫,৯৭৩.৭১ অঙ্কে। এ দিন ডলারে টাকার দামও পড়েছে।
এ দিন পতন দেখেছে এশিয়ার বহু সূচকও। পড়েছে জাপানের নিক্কেই, চিনের সাংহাই কম্পোজিট, হংকঙের হ্যাংসেং, কোরিয়ার কসপি, সিঙ্গাপুরের স্ট্রেটস টাইমস। তবে সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে করাচির শেয়ার বাজার। কেএসই১০০ সূচকটি এক সময় প্রায় ৮৮০ পয়েন্ট পড়ে যায়। পরে কিছুটা সামলালেও, দিনের শেষে পতনের অঙ্ক প্রায় ৭৪৫।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, অভিযানের খবরে সীমান্তে অস্থিরতা নিয়ে আচমকা দুশ্চিন্তা দানা বাঁধার কারণেই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন লগ্নিকারীরা। হাতের শেয়ার বেচতে থাকেন দ্রুত। অস্থিরতা গ্রাস করে বাজারকে। ঠিক যেমন হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। সে বারও নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেই প্রত্যাঘাতের প্রথম ধাক্কায় সেনসেক্স পড়েছিল ৫৭৩ পয়েন্ট। বিশেষজ্ঞদের দাবি ছিল, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের অস্থিরতার প্রশ্নই সন্ত্রস্ত করেছিল লগ্নিকারীদের। কারণ, সেই অস্থিরতা বাড়লে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারত থেকে মুখ ফেরাতে পারেন ও শেয়ার বাজার তলিয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে কাবু হয়েছিলেন তাঁরা। তবে সে বারও দিনের শেষে কিছুটা পতন সামলায় সূচক।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের ইঙ্গিত, এ দিনের অভিযানের পরে ভারত-পাক সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায় তার উপর নজর থাকবে বাজারের। সেই সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে ইতি টানতে চিন-মার্কিন আলোচনার গতিপ্রকৃতি ও লোকসভা ভোটের আগের রাজনৈতিক অস্থিরতা তো আছেই। তাঁদের মতে, আগামী দিনে এ সবের ছায়াই পড়বে সূচকে।