আকাশে দামের লড়াইকে এ বার পোর্ট ব্লেয়ারে টেনে নিয়ে গেল ইন্ডিগো।
যাত্রীদের অভিযোগ, কলকাতা থেকে অন্য সব শহরের উড়ানে সস্তার টিকিট পাওয়া যায়। শুধু পোর্ট ব্লেয়ারে নয়। টিকিট যত আগেই কাটা হোক, আন্দামান ও নিকোবরের রাজধানীতে পৌঁছতে এক পিঠের ভাড়া ৭-৮ হাজারের কমে মেলে না। তা সে এয়ার ইন্ডিয়া, জেট, স্পাইসজেট, গো, বিস্তারা— যে সংস্থার উড়ানই হোক না কেন।
এত দিনের সেই চেনা ছবিই এ বার বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ, অনেক কম দামে টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই রুটে ঢুকছে ইন্ডিগো। যা উস্কে দিয়েছে পোর্ট ব্লেয়ারে দামের টক্কর জোরালো হওয়ার সম্ভাবনা।
ইন্ডিগো ২৮ সেপ্টেম্বর কলকাতা-পোর্ট ব্লেয়ার উড়ান শুরু করছে। আর এই রুটে ঢুকেই ৩,৫০০ টাকার টিকিট দেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। যা ভাঁজ ফেলেছে অন্য সংস্থাগুলির কপালে।
বস্তুত, ভারতে ইন্ডিগোই একমাত্র সংস্থা, যারা শুরু থেকে মুনাফা করে যাচ্ছে। তাদের আর্থিক মডেল অনুসরণ করে অন্য দেশের অনেক কম খরচের বিমান সংস্থা। ফলে, ইন্ডিগোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে পোর্ট ব্লেয়ারের টিকিটের দাম কমতে পারে বলে মনে করছেন ট্রাভেল এজেন্টরাও।
পোর্ট ব্লেয়ারের উড়ানে টিকিটের দাম বেশি হওয়ার প্রসঙ্গে বিমান সংস্থাগুলির যুক্তি— পুরো রুট বঙ্গোপসাগরের উপরে বলে বেশি জ্বালানি লাগে। কারণ মাঝ আকাশে সমস্যা হলে আশপাশে কোনও বিমানবন্দরে নামার উপায় নেই। চারদিক থেকে সামুদ্রিক ঝোড়ো হাওয়ার জেরে প্রতিকুল আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় পোর্ট ব্লেয়ারের আকাশে পৌঁছেও নামা যায় না। সে ক্ষেত্রে কলকাতা থেকে গিয়ে আবার যাতে ফেরা যায়, সেই হিসেবে জ্বালানি নিতে হয়। আর বেশি জ্বালানি নিলে বিমানের ওজন বাড়ে। ফলে ১৫০ আসন থাকলেও অত যাত্রী নেওয়া যায় না। ফলে লোকসান হয়। যা এড়াতেই নিতে হয় বেশি ভাড়া।
এখানেই বাজিমাতের পরিকল্পনা ইন্ডিগোর। এক কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের বাড়তি ওজন নেওয়ার মতো বিমান আছে। এ রকম রুটে সেগুলিকে ব্যবহার করি।’’ ফলে কলকাতা থেকে ১৮০ জন যাত্রী নিয়েই উড়তে পারবে ইন্ডিগো। ২৮ তারিখে দিল্লি-পোর্ট ব্লেয়ার উড়ানও আনছে ইন্ডিগো। ৩০ সেপ্টেম্বর তা চালু হবে চেন্নাই ও হায়দরাবাদ থেকে। ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির দাবি, ‘‘কিছু দিন আগেও পোর্ট ব্লেয়ারের এক পিঠের ভাড়া ছিল ১২ হাজার টাকা। বিমান সংস্থার সংখ্যা বাড়তেই তা কমে ৮ হাজার হল। এ বার ইন্ডিগো এসে বাকিদের ঘাম ছুটিয়ে দেবে।’’