সংস্কারের চমক নেই। ঢালাও করছাড় নেই। কম আয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যয়ও কম ধরা হয়েছে। ভারসাম্য রাখতে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিকাঠামো, আবাসন-সহ সব ক্ষেত্রেই অল্প অল্প করে দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। বাজারের সার্বিক থমথমে পরিস্থিতিতে জেটলির এই ঘর-গোছানোর বাজেটকে দক্ষ হাতের ‘কেজো বাজেট’ বলেই আখ্যা দিয়েছে শিল্পমহল। যাবতীয় সীমাবদ্ধতার মধ্যেই সহজে ব্যবসা করার পরিস্থিতি তৈরির দিকে নজর দেওয়ায় ২০১৬-’১৭ সালের বাজেটে সন্তুষ্ট কর্পোরেট জগৎ। তবে রাজকোষ ঘাটতিকে বেঁধে রাখতে সরকারি লগ্নি কাটছাঁট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
ন’টি স্তম্ভে ভর দিয়ে বাজেট তৈরি হওয়ায় খুশি সিআইআই প্রেসিডেন্ট সুমিত মজুমদার ও ফিকি প্রেসিডেন্ট হর্ষ নেওটিয়া। পাশাপাশি আটকে থাকা প্রকল্পের পথে বাধা দূর করার পথেও হেঁটেছে এই বাজেট। রেল, রাস্তা, বন্দরের মতো পরিকাঠামো প্রকল্পে ২.১৮ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চেয়েছে কেন্দ্র। আর এই পদক্ষেপকেই শিল্পের নতুন জানলা খুলে যাওয়া বলে মনে করছেন অ্যাসোচ্যামের সুনীল কানোরিয়া, আইসিসির শিবসিদ্ধান্ত কল, ভারত চেম্বারের রাকেশ শাহ ও ওরিয়েন্টাল চেম্বারের শোয়েব আহমেদ ফয়জল।
বেঙ্গল চেম্বারের প্রেসিডেন্ট অম্বরীশ দাশগুপ্ত বাজেটকে দশে ছয় দিয়ে বলেন, ‘‘দুরন্ত বৃদ্ধির হার ঘোষণার বদলে বাজেটে ঘর গোছানোর প্রচেষ্টাই স্পষ্ট।’’ একই সুরে এমসিসি চেম্বার জানিয়েছে চাপের মাঝেও ভারসাম্য হারায়নি বাজেট।
ব্যবসার প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছর লাভের উপর সম্পূর্ণ আয়কর ছাড় পাবে ‘স্টার্ট-আপ’ সংস্থা। শিল্পের তরফে অভিষেক রুংতা ও অমিত অগ্রবালের বক্তব্য, এর ফলে এ ধরনের ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
তবে বিরোধিতার সুরও রয়েছে। গয়নায় শুল্ক চাপায় ক্ষুব্ধ শিল্প। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা শঙ্কর সেনের আশঙ্কা, এই কারণে ব্যবসা কমবে এবং বহু কারিগরের রুজি-রুটি বিপন্ন হবে। সেজ বা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ২০২০ সালের পরে আয়কর ছাড়ের সুবিধা তুলে নেওয়ার প্রস্তাবে অখুশি শিল্পমহল। বিশেষজ্ঞ সংস্থা কেপিএমজির রাজর্ষি দাসগুপ্তের মতে, উৎপাদন ও পরিষেবা-সহ বিভিন্ন শিল্প এই সিদ্ধান্তে মার খাবে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাজারে কোণঠাসা হয়ে পড়বে স্থানীয় সংস্থা। অন্য দিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিষেবা কর বৃদ্ধির বিরোধিতা করেছেন ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন্সের মহেশ সিংহানিয়া।