গত নভেম্বরে ১৭ মাসের তলানি ছুঁয়ে ফেলে সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে শিল্প বৃদ্ধির হার। ভোটের মুখে সেই ক্ষতেই যেন কিছুটা মলম লাগালো মূল্যবৃদ্ধি। তার হার মাথা নামাল পাইকারি ও খুচরো, দুই বাজারেই। শিল্প মহলের আশা, এর ফলে আগামী দিনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে সুদ কমানোর পথ চওড়া হল। কারণ গত ঋণনীতিতেই তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকিগুলি সরে গেলে, তারা সুদ ছাঁটার পথে হাঁটবে।
লগ্নির খরচ কমাতে বহু দিন ধরেই কম সুদের দাবি জানাচ্ছে শিল্প। এ দিন ফের সেই আর্জি জানায় তারা। অর্থনীতির বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে কেন্দ্রও এই সওয়াল করে আসছে বারবার। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক থাকার কারণ দেখিয়েই সাম্প্রতিক কালে তা একই রাখা বা বাড়ানোর পন্থা নিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে মূল্যবৃদ্ধি কমার ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি সুদ কমায়, তাতে শিল্প মহল তো বটেই, বেশ কিছুটা সুবিধা হবে মোদী সরকারেরও, বলছে সংশ্লিষ্ট মহল।
সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডিসেম্বরে খুচরো বাজারে ২.১৯ শতাংশে নামা মূল্যবৃদ্ধি ১৮ মাসের তলানিতে। এর আগে ২০১৭ সালের জুনে তাকে নামতে দেখা গিয়েছিল ১.৪৬ শতাংশে। পাইকারি বাজারেও ওই হার ৮ মাসের মধ্যে এত কমেনি।
পরিসংখ্যান বলছে, মূলত ফল ও আনাজ-সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমে যাওয়াই দুই বাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে এতখানি টেনে নামিয়েছে। আর একটি কারণ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি অনেকখানি কমা। সব মিলিয়ে যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে স্বাভাবিক বর্ষা ও খাদ্যপণ্যের দাম কমার যুক্তি দেখিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খুচরো বাজার মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস বেঁধেছিল ২.৭-৩.২ শতাংশে। যে হারকে সুদের হিসেবে কষার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয় তারা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সে দিক থেকে ডিসেম্বরে অন্তত স্বস্তি মিলেছে অনেকখানি।