মুরত লেনদেনের পরে উৎসাহ বাজারে

ভোটের আগে সাবধানে পা

সম্বৎ ২০৭৪-এ সেনসেক্স বেড়েছে ২,৪০৮ পয়েন্ট বা ৭.৪৩%। এখনকার অস্থির বাজারে যা খুব একটা খারাপ নয়। আর সম্বৎ ২০৭৫-এর শুরুতেও বৃদ্ধির মুখ দেখল শেয়ার বাজার। গত বুধবার দেওয়ালির সন্ধ্যায় মুরত লেনদেনে এক ঝটকায় সেনসেক্স উঠেছে ২৪৬ পয়েন্ট। নিফ্‌টি ৬৮ অঙ্ক।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১১
Share:

সম্বৎ ২০৭৪-এ সেনসেক্স বেড়েছে ২,৪০৮ পয়েন্ট বা ৭.৪৩%। এখনকার অস্থির বাজারে যা খুব একটা খারাপ নয়। আর সম্বৎ ২০৭৫-এর শুরুতেও বৃদ্ধির মুখ দেখল শেয়ার বাজার। গত বুধবার দেওয়ালির সন্ধ্যায় মুরত লেনদেনে এক ঝটকায় সেনসেক্স উঠেছে ২৪৬ পয়েন্ট। নিফ্‌টি ৬৮ অঙ্ক। অনেক দিন বাদে মুরত পর্বে সূচক এতটা বাড়ল। আগের দু’বছর মুরতের দিনে সূচক বন্ধ হয়েছিল কিছুটা নীচে। শেষ বার ১০ বছর আগে দেওয়ালির সন্ধ্যায় বাজার বড় উত্থান দেখেছিল ২০০৮-এর মুরতে। সে দিন সেনসেক্স বেড়েছিল ৫০১ পয়েন্ট (৫.৯%)।

Advertisement

গত কয়েক দিনে বাজার কিছুটা হলেও শুধরেছে। যার মূল কারণ—

• ইরান থেকে অশোধিত তেল আমদানি নিয়ে ভারতকে আমেরিকার ছাড় দেওয়া।

Advertisement

• বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর কমা। যার জেরে দেশে পেট্রল-ডিজেলের দাম নিম্নমুখী হওয়া।

• ডলারে টাকার উত্থান। ফলে আমদানি খরচ কমার সম্ভাবনা।

• মার্কিন মুলুকে সুদ না বাড়া।

এক সঙ্গে এতগুলি ঘটনায় পরিস্থিতি কিছুটা বাজারের পক্ষে গিয়েছে। যার ফলে খানিকটা প্রাণ ফিরেছে দুই সূচকে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি উল্টো পথে না হাঁটলে এখনই বাজারে বড় পতনের আশঙ্কা নেই। বরং কেউ কেউ সম্বৎ ২০৭৫ নিয়ে আশার কথা শোনাচ্ছেন। তবে মনে রাখতে হবে, সোমবার থেকেই ৫টি রাজ্যে নির্বাচনের শুরু। এর পরে মাত্র ছ’মাসের মধ্যেই দেশে লোকসভা ভোট। যার বড় প্রভাব থাকবে শেয়ার বাজারে। অর্থাৎ আগামী কয়েক মাস ধরে শেয়ার সূচক অস্থির থাকারই কথা। যে কারণে এই সময়ে সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে লগ্নিকারীদের।

গত সপ্তাহে আরও বেশ কিছু তথ্য এসেছে, যা প্রভাবিত করতে পারে লগ্নিকারীদের সিদ্ধান্তকে। দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—

• টানা তিন ত্রৈমাসিকে লোকসানের পরে অবশেষে অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লাভের মুখ দেখেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এই সময়ে ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা হয়েছে ৯৪৫ কোটি টাকা। নিট অনুৎপাদক সম্পদও কমে হয়েছে ৪.৮৪%।

• জুলাই-সেপ্টেম্বর, এই তিন মাসে গেলের লাভ বেড়েছে ৫০%, পৌঁছেছে ১,৯৬৩ কোটি টাকায়। ব্যাটারি নির্মাতা এক্সাইডের নিট লাভ বেড়েছে ৯৮.৩৫%। দাঁড়িয়েছে ২৬৮

কোটি টাকায়।

• বিভিন্ন মেয়াদের জমায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত সুদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক।

• অক্টোবরে সামান্য (১.৫৫%) বেড়েছে গাড়ি বিক্রি। মারুতি সুজুকির বিক্রি মাত্র ০.৬১% বাড়লেও, একই মাসে হুন্ডাইয়ের বিক্রি বেড়েছে ৪.৮৭%।

• অশোধিত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম গত শুক্রবার নেমে গিয়েছে ৭০ ডলারের নীচে। বর্তমান দাম গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এটি ভারতের পক্ষে আশীর্বাদ।

• শেয়ার বাজার অস্থির থাকা সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরে ইকুইটি ফান্ডে লগ্নি বেড়েছে ৩১%। পৌঁছেছে ১১,২৫১ কোটি টাকায়। আগের মাসে যা ছিল ৫,৯২৩ কোটি। বাজারের প্রতি লগ্নিকারীদের আস্থা যে অটুট, এটি তার স্পষ্ট ইঙ্গিত। চলতি বছরের ইকুইটি ফান্ডে সবচেয়ে বেশি লগ্নি এসেছে ফেব্রুয়ারিতে। ওই মাসে ফান্ডের পথে বাজারে লগ্নি এসেছিল ১৬,২৬৮ কোটি টাকা। এই ভাবে বাজারে নিয়মিত লগ্নি আসায়, বিদেশি লগ্নিকারীরা মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়া সত্ত্বেও বাজার একেবারে তলিয়ে যায়নি।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন