ফের সেই বিপক্ষেই গেল আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায়। বেঙ্গালুরুর সংস্থা ডেভাসের সঙ্গে ইসরোর শাখা অ্যানট্রিক্স চুক্তি ভাঙায় ইসরোকে কাঠগড়ায় তুলল হেগের আদালত। ফলে কেন্দ্রকে বিপুল ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে বলে ধারণা অনেকের। কারণ, গত বছর এই একই আইনি লড়াইয়ে ডেভাসের হাতে ৬৭.২ কোটি ডলার (তখনকার হিসেবে ৪,৪৩২ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ তুলে দিতে বলেছিল ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সালিশি আদালত। সঙ্গে বছরে ১৮% সুদও।
মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরোর বাণিজ্যিক শাখা অ্যানট্রিক্স। ২০০৫ সালে তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল ডেভাস মাল্টিমিডিয়ার। শর্ত ছিল, ইসরোর দুই কৃত্রিম উপগ্রহের (জিস্যাট-৬ এবং জিস্যাট-৬এ) ৯০% ট্রান্সপন্ডার (যার মাধ্যমে ফ্রিকোয়েন্সি একত্রিত করা হয়) লিজ নেবে তারা। এবং সেই সূত্রে ডেভাসকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য ৭০ মেগাহার্ৎজ এস-ব্যান্ড স্পেকট্রাম দেবে ইসরো। যা বেশ দুর্লভ। বিনিময়ে ১২ বছর ধরে মোট ৩০ কোটি ডলার (২,০১০ কোটি টাকা) দেবে ডেভাস মাল্টিমিডিয়া।
কিন্তু ২০১১ সালে টুজি কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরে সেই চুক্তি বাতিল করে কেন্দ্র। বলা হয়, নইলে বিঘ্নিত হতে পারে দেশের নিরাপত্তা। এর পরই আইনি লড়াই শুরু হয় দু’পক্ষের। ২০১৫ সালে আইসিসি-র সালিশি আদালত মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তারপরে এ বার হেগের সালিশি আদালতের এই নির্দেশ। তাদের মতে, অনৈতিক ভাবে এই চুক্তি ভেঙেছে কেন্দ্র। করেছে বৈষম্যমূলক আচরণও।
এই প্রসঙ্গে এ দিন বিবৃতিতে ডেভাস জানিয়েছে, এই নিয়ে পরপর দু’টি আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায় তাদের পক্ষে গেল। সংস্থার বিদেশি লগ্নিকারীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ব্যবহারের কথাও হেগের আদালত তুলেছে বলে তাদের দাবি। ইসরো জানিয়েছে, রায় খতিয়ে দেখে তবেই মন্তব্য করবে তারা।
বিতর্কিত এই চুক্তির জেরে এক সময় চাকরি খোয়াতে হয়েছে ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার-সহ পাঁচ বিজ্ঞানীকে। কেন্দ্রকে পেতে হয়েছে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ। ডেভাসের চেয়ারম্যান লরেন্স বাব্বিও এ দিন বলেছেন, এই ঝামেলা আপোসে মিটিয়ে নেওয়াই তাঁদের পছন্দ। কিন্তু যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আদালতে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই চালাবে ডেভাস।