নোট সঙ্কটের জের কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে গয়না শিল্পের বাজি এ বার অক্ষয় তৃতীয়া। ‘মিনি ধনতেরাস’-এর আশায় কমপক্ষে ২০% বিক্রি বৃদ্ধির জন্য ওই ২৮ এপ্রিলের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নোটের আকালে ৮০ শতাংশের বেশি ব্যবসা খুইয়েছে গয়না শিল্প। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে স্বর্ণশিল্প ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি মার খেয়েছে। লোকসানের ধাক্কায় রুজি-রুটি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কারিগর।
বিপর্যস্ত শিল্পকে চাঙ্গা করতে এখন ছোট ছোট উৎসবের দিকে নজর দিচ্ছে গয়না শিল্প, অক্ষয় তৃতীয়া যার মধ্যে অন্যতম। গত বছর অক্ষয় তৃতীয়ার সময়ে সোনার চাহিদা ছিল ২০ টন। গয়না শিল্পে তখন ধর্মঘট চলছিল বলে তা পূরণ করা যায়নি। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের প্রত্যাশা, টাকার দাম বাড়ায় এ বছর দ্বিগুণ ব্যবসা হবে। ফেডারেশনের কর্তা নীতিন খণ্ডেলওয়াল জানান, নোট সঙ্কটের পরে অক্ষয় তৃতীয়াই প্রথম শুভ দিন। তাঁর দাবি, ৩০% পর্যন্ত বিক্রি বাড়বে। আশার কথা শোনাচ্ছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলও। গত সাত বছরে ২০১৬-এ সোনার চাহিদা সব চেয়ে কম ছিল ভারতে। প্রায় ৬০০ টন। চলতি বছরে সেই চাহিদা ৬৫০-৭৫০ টন হতে পারে বলে দাবি ভারতে কাউন্সিলের কর্তা সোমসুন্দরম পি আরের।
বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনায় বুক বাঁধছে এ রাজ্যের গয়না শিল্পমহল। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কর্তা বাবলু দে জানান, মার্চের মাঝামাঝি থেকে ব্যবসার হাল ফিরতে শুরু করেছে, যদিও পুরনো গরিমা ফিরে পেতে অনেকটা সময় লাগবে। ৮০% হারানো ব্যবসার অর্ধেক ফেরত এসেছে বলে দাবি তাঁর। তাঁর কথায়, ‘‘অক্ষয় তৃতীয়ায় ব্যবসা ১৫-২০% বাড়বে বলে আশা।’’
তবে শুধুই শুভ দিনে কেনাকাটা নয়। জিএসটি এবং টাকার দাম বাড়ার মতো বিষয়ও ক্রেতারা মাথায় রাখছেন বলে ধারণা সেনকো গোল্ডের অন্যতম কর্তা শুভঙ্কর সেনের। তিনি জানান, অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে কেনাকাটার পাশাপাশি বিয়ের গয়নাও কিনছেন ক্রেতারা। কারণ জিএসটি চালু হলে দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
নোট সঙ্কটের জের ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছে নেট বাজারে সোনার বিকিকিনিও। এর ছাপ পড়েছে এ রাজ্যেও। অনলাইন গয়না সংস্থা ব্লুস্টোন-এর প্রধান গৌরব সিংহ কুশওয়াহার দাবি, নন্দীগ্রাম, আনারা, হাসিমারার মতো গ্রামাঞ্চল থেকেও ক্রেতা পাচ্ছেন তাঁরা। আপাতত দেশে ৬,০০০ কোটি ডলারের গয়না শিল্পের ১ শতাংশের কম নেটে বিক্রি হয়।