চেপে বসছে ফাঁস। বিজয় মাল্য।
টাকা নয়ছয়ের গন্ধ নাকে আসছে বলে তদন্তকারীরা ঠারেঠোরে বারবারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। কিন্তু সত্যিই সে রকম কিছু হয়েছে কি না, কিংবা হয়ে থাকলে তার মাপ কতটা, সেটা এখনও প্রমাণসাপেক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, তাই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এ বার মাল্য কাণ্ডে তহবিল নয়ছয় নিয়ে তদন্তের পরিধি আরও বাড়াচ্ছে। যার অঙ্গ হিসেবে বিজয় মাল্যের বসে যাওয়া বিমান সংস্থা কিংগ্ফিশার এয়ারলাইন্সকে বিভিন্ন সময়ে যে-সমস্ত ব্যাঙ্ক ধার দিয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় ছ’টির কাছ থেকে সংস্থার যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশদে চেয়ে পাঠিয়েছে তারা। সংস্থার শীর্ষ পদাধিকারীরা যে-সব আর্থিক লেনদেন চালিয়েছেন, খুঁটিনাটি সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে সেগুলিরও।
এ দিকে, ব্যাঙ্কগুলি দু’দিন আগেই উত্তর গোয়ায় অবস্থিত কিংগ্ফিশার ভিলা হাতে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যা বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিল সংস্থা। আর এ বার বিক্রি হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছে এই মুহূর্তে দেশের সব থেকে বিতর্কিত শিল্পপতির ব্যক্তিগত বিলাসবহুল বিমান। শোধ না-করা ৫০০ কোটি টাকা করের অন্তত কিছুটা উসুল করতে যা নিলামে বেচার জন্য প্রাণপাত চেষ্টা করছেন কর কর্তৃপক্ষ। মাল্যের সুদিনের বহু স্মৃতি জড়িয়ে থাকা এয়ারবাসের বিমানটি আজ তিন বছর হল ধুলোয় ধূসরিত হয়ে পড়ে রয়েছে মুম্বই বিমানবন্দরের এক নির্জন কোণে।
৯,০০০ কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক-ঋণ বাকি ফেলে বিদেশে লোকচক্ষুর আড়ালে পাড়ি দিয়েছেন মাল্য। যা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে চলছে সিবিআই তদন্ত। আর আইডিবিআই ব্যাঙ্ক থেকে কিংগ্ফিশারের ধার নেওয়া ৯০০ কোটি টাকার একাংশ বেআইনি ভাবে সরানো এবং আরও কিছু আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে কালো টাকা প্রতিরোধ আইনের আওতায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে ইডি।
অনিয়মের হদিস পাওয়ার এই তদন্তের পরিধিই এ বার আরও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। সূত্রটির দাবি, বিভিন্ন সময়ে দেশে এবং বিদেশে কিংগ্ফিশারের অ্যাকাউন্ট থেকে যে-অর্থ পাঠানো হয়েছে এবং তাদের অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন জায়গা থেকে যে-অর্থ ঢুকেছে, সেই সবের তথ্যই বিস্তারিত জানাতে হবে ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলিকে। যা বিশ্লেষণ করে ইডি দেখতে চায়, কোন সময়ে, কোন কোন অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা এসেছে সংস্থার ঝুলিতে। তারাই বা কখন, কোথায়, কতটা পাঠিয়েছে।
আর এক সূত্রের বক্তব্য, মাল্যের সংস্থার বিভিন্ন লেনদেন আতসকাচের তলায় এনে ইডি দেখতে চাইছে সেগুলির আড়ালে কালো টাকা লেনদেন হয়েছে কি না। কিংবা করফাঁকি দেওয়ার স্বর্গ হিসেবে পরিচিত কোনও দেশে তহবিল সরানো হয়েছে কি না।