এই প্রথম সিঙ্গাপুরের মডেলে কলকাতায় তৈরি হল স্টার্ট-আপ বা নতুন সংস্থার জন্য কাজের জায়গা।
মডেলটি নিয়ে এসেছে শহরেরই এক স্টার্ট-আপ সুমন্ত্রণা। শুধু কাজের জায়গা নয়। স্টার্ট-আপ সংস্থার জন্য ঝাঁ চকচকে অফিসের সঙ্গে এখানে মিলবে হিসেব রাখা, আইনি ও কর সংক্রান্ত সহায়তা, ব্যবসায়িক পরামর্শ-সহ নানা পরিষেবা। অর্থাৎ সংস্থা তৈরির সঙ্গে ব্যবসা চালানোর রীতি, সবই থাকবে এই প্যাকেজে।
আর এই সুযোগ-সুবিধা বাজার দরের চেয়ে কম হারেই পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। নতুন তৈরি বিশেষজ্ঞ সংস্থা সুমন্ত্রণার প্রধান রূপেন রায়ের মতে, পুঁজি পাওয়াই সব নয়। তিনি বলেন, ‘‘উদ্ভাবনী ক্ষমতার পাশাপাশি ব্যবসা চালানোর খুঁটিনাটি জানাও জরুরি। অধিকাংশ স্টার্ট-আপের এই সমস্যা থেকে যায়। সে কারণেই এই মডেল এখানে চালু করছি।’’
তবে অফিস তৈরির জায়গা চালানোর দায়িত্ব সুমন্ত্রণা নিজের হাতে রাখেনি। সেই কাজ করবে পেশাদার সংস্থা। দিল্লির ‘ফেসিলিটি ম্যানেজমেন্ট’ সংস্থা প্রক্সিমিটের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে সুমন্ত্রণা। প্রক্সিমিটের কর্তা উপল চক্রবর্তীর দাবি, নতুন ভাবনা বাস্তবায়িত করার সময়ে অফিস সামলানো সহজ কাজ নয়। নেট যোগাযোগ, কর্মীদের খাওয়ার ব্যবস্থা থেকে ঝকঝকে অফিস বজায় রাখার মতো কাজ করে দেবেন তাঁরা।
রাজারহাটে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্টার্ট-আপ সংস্থার ব্যবহারের জন্য এই অফিস। ডিএলএফ গ্যালেরিয়ায় ৩০টি আসন নিয়ে তৈরি এই জায়গা। এ ছাড়াও থাকবে ‘কনফারেন্স রুম’। সুমন্ত্রণার নিজস্ব জায়গা হওয়ার কারণেই ভাড়ার অঙ্ক কম রাখা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
পূর্বাঞ্চলে তো বটেই। স্টার্ট-আপ মহলের দাবি, গোটা দেশেই এ ধরনের পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। স্টার্ট-আপ লগ্নিকারীদের সংগঠন ক্যালকাটা এঞ্জেল নেটওয়ার্ক (ক্যান) এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, রাজ্যে এই পরিকাঠামো নতুন লগ্নির দরজা খুলে দেবে।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে স্টার্ট-আপ বা নতুন ব্যবসার সংখ্যা এখনও এখানে সামান্য। কারণ মেধা, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, পুঁজি ও পরিকাঠামোর মেলবন্ধনের কাজটাই দেরিতে শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরু বা দিল্লির তুলনায় কলকাতায় স্টার্ট-আপ সংস্থার সংখ্যা নেহাতই কম। ভারতে যত প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্টার্ট-আপ তৈরি হয়, তার প্রায় ৪০ শতাংশের শিকড় বেঙ্গালুরুতে। দিল্লিতে ২০%, পুণে-মুম্বইয়ে ১৫%। কলকাতা-সহ পূর্বাঞ্চলে তা মাত্র ১০%।