রঘুনাথপুরে ডিভিসির তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেল লাইন পাতার কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।
রেল লাইন মোট ১৭.৬ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৮০০ মিটার লাইনের জমি মালিকেরা অনিচ্ছুক হওয়ায় রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া ক্ষতিপূরণ নিচ্ছিলেন না। ফলে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ডিভিসির তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেল লাইন পাতার কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। কয়লার অভাবে পুরো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছিল না কেন্দ্রটিতে। দিনে গড়ে ৫ কোটি টাকা করে লোকসান হচ্ছিল সংস্থার। অবশেষে নবান্ন ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে লাইন পাতার সমস্যা মিটতে চলেছে বলে খবর।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের দাবি, জমি পাওয়া নিয়ে জটিলতা অনেকটা কেটেছে। মালিকেরা ক্ষতিপূরণ নিচ্ছেন। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেল লাইন পাতার কাজে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।
রঘুনাথপুরে দু’টি ধাপে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ডিভিসির। যার মধ্যে ৬০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিটের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। এ জন্য সংস্থার খরচ হয়েছে ৯,৩৯৭ কোটি টাকা। কিন্তু কয়লা আনার জন্য আদ্রা থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত রেল লাইন পাতার কাজ শেষ করা যাচ্ছিল না বলে ওই দুই ইউনিটে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছিল না। বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তিও করা সম্ভব হচ্ছিল না সংস্থার পক্ষে। ডিভিসির দাবি, অনেক বাধা কাটিয়ে ওঠার পরেও পুরুলিয়ার ডিকটিলা ও জামতোরিয়া মৌজার কয়েক জন জমি মালিকের আপত্তিতে ৮০০ মিটার লাইন পাতার কাজ থমকে গিয়েছিল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এক ঝলকে
• রঘুনাথপুরে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিভিসির
• দু’টি ইউনিটে উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট করে মোট ১,২০০ মেগাওয়াট
• প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৯,৩৯৭ কোটি টাকা
সমস্যা কোথায়
• কয়লা আনতে রেল লাইন পাতা শুরু হলেও, কিছু জমি মালিক ৮০০ মিটারের জন্য টাকা নিচ্ছিলেন না
• কয়লার অভাবে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছিল না
• ফলে ডিভিসির লোকসান হচ্ছিল দিনে গড়ে ৫ কোটি টাকা
আর এখন
• রাজ্য নির্ধারিত দামে টাকা নিচ্ছেন অনিচ্ছুক জমি মালিকেরা
• সংস্থার আশা, জুলাইয়েই পুরোদমে চালু হবে দু’টি ইউনিট
সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রথম লক্ষ্য ছিল রঘুনাথপুরের দু’টি ইউনিটের উৎপাদন পুরোদমে চালু করা। রেলে কয়লা আনার ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না বলেই তা হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সহযোগিতায় জমি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।’’ পুরো জমি হাতে এলে জুলাইয়ের মধ্যে লাইন পাতার কাজ শেষ করা সম্ভব হবে হবে বলে তাঁর দাবি।
রঘুনাথপুর থেকে এখন পশ্চিমবঙ্গ ২০৪ মেগাওয়াট, হরিয়ানা ১০০ মেগাওয়াট, পঞ্জাব ৩০০ মেগাওয়াট ও কেরল ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে। আরও অন্যান্য ক্ষেত্র মিলিয়ে ৬৫৪ মেগাওয়াট বিক্রি করা যাচ্ছে। এ জন্য দিনে ১০,০০০ টন কয়লা সড়ক পথে আনা হচ্ছে। রেল লাইন পাতা শেষ হলে কয়লা আনায় সমস্যা হবে না। তখন আগ্রহী অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে দ্রুত বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি করা হবে বলে সংস্থার দাবি।