রতন টাটার উপস্থিতিতে চুক্তি দুই সংস্থার কর্তাদের। ছবি: পিটিআই
দশ বছর আগে পা রেখেছিলেন ককপিটে। বলেছিলেন, ‘‘অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’’ সোমবার সেই রতন টাটাকেই দেখা গেল চুক্তি সইয়ের সময়ে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে। এফ-১৬ যুদ্ধ বিমানের উন্নততম সংস্করণ ‘ব্লক ৭০’ তৈরির জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের সঙ্গে চুক্তি করল টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস। সেই এফ-১৬, উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে যা নিয়ে গল্প এক সময়ে মুখে মুখে ফিরেছিল। নিজেদের আকাশ রক্ষায় এই বিমান ব্যবহার করে পাকিস্তান, ইরাক-সহ ২৬টি দেশ।
প্রতিরক্ষায় আমদানি নির্ভরতা কমাতে ভারতেই উন্নত প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিরও এটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই সেই হিসেবে টাটা এবং লকহিড মার্টিনের এই চুক্তি তাতে জ্বালানি যোগাবে। বিশেষত, মার্কিন সংস্থাটি যে ভাবে টেক্সাসে নিজেদের ফোর্ট ওয়ার্থ কারখানার কাজ ভারতের মাটিতে নিয়ে আসার কথা বলেছে, তা বড় বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেয়। আসতে পারে আধুনিক প্রযুক্তিও। তবে এই যুদ্ধ বিমান ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ব্যবহার করতে হবে বলে আগেই বলে রেখেছে মার্কিন সংস্থাটি। পাশাপাশি, রাস্তা খোলা থাকছে এ দেশে তা তৈরি করে রফতানিরও।
তবে থাকছে চিন্তার কাঁটাও। অনেকে বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেখানে আমেরিকার মাটিতে কাজের সুযোগ তৈরির কথা বলছেন, সেখানে লকহিডের কারখানা সরানোর সিদ্ধান্ত তাঁকে চটিয়ে দেবে না তো? বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফর যখন সামনের সপ্তাহেই। লকহিডের অবশ্য দাবি, এতে মার্কিন কর্মীদের কাজ যাবে না। ট্রাম্পকে নাকি নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা আগে জানিয়েওছে তারা।
আরও পড়ুন: বল গড়ানো শুরু বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের
২০০৭ সালে বেঙ্গালুরুর বিমান প্রদর্শনীতে প্রথম ভারতীয় অসামরিক ব্যক্তি হিসেবে ‘এফ-১৬ ফ্যালকন’ উড়িয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠীর তৎকালীন কর্ণধার রতন টাটা। বিমানের প্রতি তাঁর ‘দুর্বলতাও’ সবার জানা। ভারতের মাটিতে যাত্রীবাহি বিমান পরিষেবা শুরু হয়েছিল টাটাদের হাত ধরে। এ বার যুদ্ধ বিমান তৈরির ব্যবসাতেও পুরোদস্তুর পা রাখল তারা। এ দিন প্যারিস এয়ার শোয়ে রতন টাটার উপস্থিতিতে চুক্তি সই করলেন টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের সিইও সুকরণ সিংহ ও লকহিড মার্টিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্জ স্ট্যান্ডরিজ।