panagarh

Matrix: রাজ্যে সার উৎপাদন শুরুর মুখে ম্যাটিক্স

প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে। সিবিএম বা কোল বেড মিথেন গ্যাস দিয়ে ২০১৭ সালে মাসখানেকে প্রায় ১৩ হাজার টন সার তৈরি করলেও পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে ঝাঁপ বন্ধ হয় কারখানাটির।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০০
Share:

প্রতীকী ছবি

অনেকটা যেন ফিনিক্স পাখির মতোই ফিরছে পানাগড়ে ম্যাটিক্স গোষ্ঠীর সার কারখানা।

Advertisement

Advertisement

বছর তিনেক আগে কিছু দিনের জন্য চালু হওয়ার পরে জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পানাগড় শিল্পতালুকে ম্যাটিক্স গোষ্ঠীর সার কারখানা। সম্প্রতি গেল-এর থেকে সেই জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস পেয়ে ফের ঝাঁপ খোলার জন্য কোমর বাঁধে তারা। শুরু হয় প্রস্তুতি। সূত্রের খবর, অবশেষে সোমবার ভোর রাতে চালু হয়ে গিয়েছে সার তৈরির মূল উপাদান অ্যামোনিয়ার উৎপাদন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আজ, মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়ে যাবে সার তৈরির কাজও। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এক সময় অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া ম্যাটিক্স এখন নতুন সন্ধিক্ষণে। যার হাত ধরে নতুন লগ্নি এবং কর্মসংস্থান
পাচ্ছে রাজ্যও।

প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে সার তৈরির জন্য বাম আমলের মন্ত্রিসভা ম্যাটিক্সের লগ্নি প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে ঘিরে রাজ্যে শিল্পায়নে কিছুটা জটিলতা তৈরি হলে‌ও, ম্যাটিক্স-কে কেন্দ্র করে পরে আরও ১৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে পানাগড় শিল্পতালুক গড়ে তোলে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে। সিবিএম বা কোল বেড মিথেন গ্যাস দিয়ে ২০১৭ সালে মাসখানেকে প্রায় ১৩ হাজার টন সার তৈরি করলেও পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে ঝাঁপ বন্ধ হয় কারখানাটির।

২০০৬ সাল থেকে রাজ্যে গেল-এর প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন প্রকল্পের পরিকল্পনা কার্যকর হলে সেই গ্যাসের উপর ভর করেই এগোনোর আশায় ছিল ম্যাটিক্স। কিন্তু জমি জটে গেল-এর প্রকল্পটিও থমকে যাওযায় কার্যত দেউলিয়া হওয়ার মুখে পৌঁছয় তারা। পরে সেই জট কাটে। মাস আষ্টেক আগে গেল-এর পাইপলাইনের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে কারখানা ফের চালু করতে ম্যাটিক্স উদ্যোগী হলেও আগের বিপুল আর্থিক সঙ্কটের জেরে কার্যকরী মূলধন জোগাড়ে কিছুটা বাড়তি সময় লাগে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকা যন্ত্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ করে সবটা সচল করাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কারখানার কর্মীরা সেই চ্যালেঞ্জ সামলে দেন।

গত মাসে অ্যামোনিয়া উৎপাদনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। সূত্রের খবর, এ দিন ভোর ৩টেয় কারখানায় অ্যামোনিয়ার উৎপাদন শুরু হয়। সব কিছু ঠিক থাকলে তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই অ্যামোনিয়া দিয়ে সার উৎপাদনও শুরু হওয়ার কথা। কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতার ৬০% চালুর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আপাতত ৫০% চালু হয়েছে। দৈনিক ১০০০-১১০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন হবে। আর সার তৈরি হবে দৈনিক ১৯০০ টনের মতো। দিন পনেরোর মধ্যেই ১০০%, অর্থাৎ, দৈনিক ৩৮৫০ টন সার তৈরি সম্ভব হবে বলা আশাবাদী ম্যাটিক্স। কারখানা ছাড়াও বিপণন, পরিবহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও বড় সড় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, দাবি তাদের।

সার বিপণন কেন্দ্রের নিয়মে করতে হয় সংস্থাগুলিকে। সেই নিয়মে ম্যাটিক্স পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের চাষিদের সার বিক্রির অনুমোদন পেয়েছে। এ জন্য তারা ৫০০ জন ডিলার নিয়োগ করেছে। কারখানা চালু হলে দেশের সার আমদানি ১৫% কমবে ও বছরে ৪০-৫০ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে বলে আগেই দাবি করেছিল ম্যাটিক্স। আর প্রথম পর্যায়ে সাফল্য পেলে কারখানার দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারণেরও পরিকল্পনা
রয়েছে সংস্থাটির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন