ফাইল চিত্র
ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে। সবুরেও মেওয়া ফলছে না। বেশির ভাগ এটিএম বন্ধ। যদিও বা গুটিকয়েক এটিএমে টাকা মিলছে, কিছু ক্ষণের মধ্যেই মুখের কাছে ঝুলে যাচ্ছে নোটিশ— সার্ভিস নট অ্যাভেলেবল। এই চিত্র এখন গোটা দেশেই।
খুচরো পেতে ঘুম ছুটেছে সাধারণের। তবে, নোটকাণ্ডের এই বাজারে বেশ কিছু মানুষেরও ঘুম ছুটেছে। কালো টাকা কারবারিদের ঘুণ ধরা টাকা এখন কোন উপায়ে সাদা করা যায় সেই নিয়ে ক্যালকুলেটরে বিস্তর হিসেব চালাচ্ছেন ছোট অ্যাকাউন্ট ফার্মের কর্মীরা। রাতারাতি তাঁদের কমিশনের চার্জও বেড়ে গিয়েছে ৫ শতাংশ থেকে একেবারে ২৫ শতাংশয়। হিসাব বহির্ভূত ভাবে যাঁদের কাছে আড়াই লাখ বা তার বেশি নগদ টাকা রয়েছে তাঁরা ব্যাঙ্কে তা জমা করতে ভয় পাচ্ছেন। বাধ্য হয়েই ওই সব ছোট অ্যাকাউন্ট ফার্মের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে তাঁদের।
আয়কর দফতরের এক অফিসার জানান, “সত্ ভাবে যাঁরা আয়কর দেখিয়ে এসেছেন, ২.৫ লক্ষর বেশি টাকা তাঁরা নির্দ্বিধায় জমা দিতে পারেন। তবে আয়ের উত্স-র যথাযথ কারণ দেখাতে হবে।” আয়কর অ্যাক্ট অনুযায়ী, ২৭০ (এ)-র নতুন ধারায় বলা হয়েছে, আয়করে দেখানো হয়নি এমন অর্থ জমা করলে, শাস্তি হিসাবে ২০০ শতাংশ কর গুনতে হবে। অর্থাত্ ৩ থেকে ৫ লক্ষ নগদ টাকা জমা করতে গেলে ১৫ শতাংশ বেশি কর গুনতে হবে। আর যদি ২০ লক্ষ নগদ টাকা জমা করলে, কর দিতে হবে ৬৩.৫ শতাংশ। এর সঙ্গে আয়কর দফতরের নজরেও পড়তে পারেন করদাতারা।
নগদ টাকার 'নগদ হিসবে'
সংসারের নানা খরচের মধ্যেও প্রতি মাসে অল্প অল্প করে লক্ষ্মী ভাঁড়ে জমিয়ে রেখেছেন এমন গৃহবধূর সংখ্যাও কম নয় এ দেশে। তাঁদের জন্য তেমন কোনও আয়কর নিয়ম নেই। তাঁরা নির্দ্বিধায় ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা করতে পারেন। তবে সেই অর্থের পরিমাণও যুক্তিসম্মত হতে হবে। কী রকম? ধরুন, আয়করদাতার মাসে আয় ৮০ হাজার। সারা মাসে খরচ হয় ৪০ হাজার টাকা। সেখানে প্রতি মাসে আয়করদাতার স্ত্রী ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা অনায়াসে জমাতে পারেন।
এ ছাড়াও প্রাইভেট টিউটর, বাড়ি বাড়ি কাজ করেন এমন ব্যক্তিদের অসঙ্গতিপূর্ণ অর্থ জমা পড়লে আয়কর দফতরের নজরে আসতে পারেন তাঁরা। এমনকী, যে কোনও অনুষ্ঠানে বহুমূল্যের উপহার পেলে, সেটাও খতিয়ে দেখবে আয়কর দফতর।