আগামী ১ জুলাই থেকে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালুকেই এখন পাখির চোখ করেছে কেন্দ্র। শনিবার সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোলো তারা। ওই কর চালুর পরে রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি হলে তা কী ভাবে মেটানো হবে, সেই সংক্রান্ত বিলে এ দিন অবশেষে ঐকমত্য তৈরি হল জিএসটি কাউন্সিলে। পরের বৈঠকে (৪-৫ মার্চ) বাকি বিষয়গুলি নিয়েও কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি একমত হতে পারবে বলে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি। একই কথা মনে করছেন বেশ কিছু রাজ্যের অর্থমন্ত্রীও। তাই সব মিলিয়ে, এ দিনের পরে কিছুটা উজ্জ্বল হয়েছে জুলাইয়ে জিএসটি চালুর সম্ভাবনা।
জিএসটি চালু করতে সংবিধান সংশোধনের কাজ আজ অনেক দিনই সারা। ঘোষণা করা হয়েছে জিএসটি-র হার। বলা হয়েছে, এই কর চালুর দরুন রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি হলে, পাঁচ বছর ধরে প্রতি ত্রৈমাসিকে তা মিটিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই টাকার সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটিও ঠিক করা হয়েছে আগেই। জানানো হয়েছে, সে জন্য বিলাসবহুল গাড়ি, সিগারেটের মতো তামাকজাত পণ্য ইত্যাদির উপর সর্বোচ্চ ২৮% কর ছাড়াও বসবে সেস। সেই সেস থেকে যে ৫০ হাজার কোটির তহবিল তৈরি হবে, ক্ষতিপূরণ মেটানো হবে সেখান থেকে। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র-সহ কাউন্সিলের কয়েক জন সদস্য।
যা ঠিক হল...
• রাজস্ব কমলে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণের খুঁটিনাটি নিয়ে ঐকমত্য
• আলোচনা এগোলো সিজিএসটি, আইজিএসটি ও এসজিএসটি নিয়ে
• পরের বৈঠক ৪-৫ মার্চ
এর পরে...
• খসড়া বিলের কিছু অংশ নিয়ে মতপার্থক্য মেটানো
• সিজিএসটি, আইজিএসটি বিল সংসদে এবং এসজিএসটি বিল বিধানসভায় পাশ
• কোন পণ্য, পরিষেবায় কী হারে কর, তা ঠিক করবেন অফিসাররা
• কাউন্সিলের বৈঠকে তাতে সায়
• ৯ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দফায় জিএসটির যাবতীয় বিল পেশ
লক্ষ্য
• আগামী ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করা
অমিতবাবুর বক্তব্য ছিল, ২০১৫-’১৬ সালের সাপেক্ষে রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় ১৪% হারে বাড়বে ধরে নিয়ে ক্ষতিপূরণ হিসেব হওয়ার কথা। তাঁর দাবি ছিল, জিএসটি চালু হলে এমনিতেই প্রথম দু’বছর রাজস্ব আদায় কমবে। তার উপর নোট বাতিলের জেরে আগে থেকেই তা কমছে। অর্থাৎ, পরিকল্পিত ৫০ হাজার কোটির তহবিল ক্ষতিপূরণ মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
কিন্তু এ দিন জেটলি জানিয়েছেন, ‘‘এ নিয়ে যাবতীয় বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তা আলোচনার জন্য আর কাউন্সিলে আসবে না। বরং অনুমোদনের জন্য যাবে মন্ত্রিসভার কাছে। সেখানে সায় মিললে, বিলটি সংসদে পেশ করব আমরা।’’ দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া বলেছেন, এ নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই। কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস অ্যাইজ্যাক জানিয়েছেন, রাজস্ব ক্ষতি ৫৫ হাজার কোটি ছাড়ালে, পাঁচ বছরের পরেও সেস বহাল থাকবে। বাকি বিষয়গুলি নিয়েও ৪-৫ মার্চের বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছনো যাবে বলে আশাবাদী বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা।
জিএসটি হবে তিন রকম— (১) কেন্দ্রের বসানো (সিজিএসটি) (২) রাজ্যের বসানো (এসজিএসটি) (৩) ইন্টিগ্রেটেড বা সম্মিলিত (আইজিএসটি)। জেটলি জানিয়েছেন, এই তিন বিল নিয়েও মোটামুটি একমত হওয়া গিয়েছে। এগুলির বিলের খসড়াও পরের বৈঠকে সায় পাবে বলে তাঁর আশা।