জন্মদিনের ভুরিভোজ চলছে রেস্তোরাঁয়। ব্যস্ত জীবনে বাড়িতে রেঁধে খাওয়ানোর সময় নেই। মেনুতে চাইনিজ, মোগলাই, কেক থেকে শুরু করে হাজারো পদ থাকলেও বাদ পড়ল পায়েস। তাই পাঁচ বছরের নাতনির জন্মদিন পালন তার দিদিমার কাছে যেন অসম্পূর্ণই থেকে গেল। ঝকঝকে নিয়নের আলোয় শেষ পাতে চকোলেট আইসক্রিম খেতে খেতে তিনি ভাবলেন পায়েসও ঠিক এ রকম কাপে করে পাওয়া গেলে মন্দ হত না।
প্রয়োজনের এই তাগিদ থেকেই দ্রুত বদলাচ্ছে বাজার। আলুভাজা থেকে সর্ষে বাটা সব মিলছে প্যাকেটে। আর বাঙালির এই ‘রেডিমেড’ অভ্যাসে এ বার জুড়তে চলেছে পায়েসও। প্যাকেটবন্দি খাবার হিসেবে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অধীনে থাকা মাদার ডেয়ারি নিয়ে আসছে শেষ পাতে রসনা তৃপ্তির এই পদটি। তামাম বাঙালির জন্য এটি পুজো-উপহার বলে জানিয়েছে মাদার ডেয়ারি।
এ মাস থেকে পাওয়া যাবে সংস্থার চিনির পায়েস। আর নলেন গুড়ের পায়েস পেতে গড়াবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ। সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, দাম থাকছে সাধ্যের মধ্যেই।
মাদার ডেয়ারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পায়েস তৈরিতে ব্যবহার হবে ডেয়ারির দুধ। গোবিন্দভোগ চাল কেনা হবে রাজ্যের কৃষি দফতর থেকে। পেস্তা জোগাবে কাশ্মীর এমপোরিয়াম। আর নলেন গুড় আনা হচ্ছে যাঁরা খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন, তাঁদের ঘর (শিউলি পরিবার) থেকে। তা বছরভর ব্যবহারের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থাও থাকছে। এ ছাড়া, পায়েস তৈরির জন্য দিল্লি থেকে আনা হয়েছে কম্পিউটারচালিত যন্ত্র। শেষে পায়েস মোড়কবন্দি হবে কাপে। সংস্থার তরফে দাবি, খাবারের গুনমান নিয়ে কোনও আপস হবে না। তৈরির পরে ১০ দিন তা রাখা যাবে।
প্রশাসনের একাংশ বলছেন, মাদার ডেয়ারি রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রথম ইনিংসে লাভের মুখ দেখেছিল। এ বার দ্বিতীয় ইনিংসে তারা রকমারি সম্ভারে অন্যান্য প্রতিযোগী ডেয়ারি সংস্থাগুলিকে ছাপিয়ে যাবে বলে তাঁদের দাবি।
মাদার ডেয়ারির বিপণন অধিকর্তা সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন পণ্য বাজারে আনার আগে চাহিদা নিয়ে সমীক্ষা করেছি। সময়ের অভাবেই বহু বাঙালি রান্না আজ হারিয়ে যাচ্ছে। পায়েস এর অন্যতম। আমরা সুস্বাদু পায়েস আনতে পারলে আশা করি মানুষ তা গ্রহণ করবেন।’’