Insurance

বিমায় দরজা হাটের উদ্যোগে আপত্তি সঙ্ঘ-পরিবারেই

বাজেটেই বিমা সংস্থায় বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৪৯% থেকে বাড়িয়ে ৭৪% করেছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২১ ০৬:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে যখন দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘট চলছে, ঠিক তখনই বিমায় ৭৪% বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দিতে সংসদে বিল পেশ করল মোদী সরকার। বিদেশি লগ্নির ধাক্কায় দেশের বিমা সংস্থাগুলি ‘স্বদেশি’ তকমা হারাবে, এই অভিযোগে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি উঠেছে সঙ্ঘ-পরিবারের মধ্যে থেকেই। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চও একে ‘চিন্তাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

Advertisement

বাজেটেই বিমা সংস্থায় বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৪৯% থেকে বাড়িয়ে ৭৪% করেছে কেন্দ্র। গত বুধবার মন্ত্রিসভা বিমা আইন সংশোধনে সায় দেয়। আজ রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এই বিল পেশ করেন। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, দ্রুত এই সব পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট সরকার বিষয়টিতে দেরি করতে চাইছে না।

এখন জীবন বিমা এবং সাধারণ বিমা সংস্থায় বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৪৯% হওয়ায় সেগুলির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ভারতীয় সংস্থার হাতেই রয়েছে। কিন্তু তা ৭৪% হলে যে সংস্থাগুলির রাশ বিদেশি সংস্থার হাতে যেতে পারে, বাজেটেই সে কথা বলেছিলেন নির্মলা। এতে আপত্তি তুলে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ বলেছিল, আর্থিক ক্ষেত্রে বিদেশি আধিপত্য বাড়তে দেওয়া ঠিক নয়। এতে দেশের আর্থিক সম্পদেও বিদেশি দখল বাড়ে, উন্নয়নে প্রভাব পড়ে।

Advertisement

অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য বক্তব্য, নতুন কাঠামোয় বিমা সংস্থার পর্ষদে সিংহভাগ ডিরেক্টর হবেন ভারতীয় নাগরিক। বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পদেও ভারতীয়রাই বসবেন। অন্তত ৫০% ডিরেক্টর স্বাধীন থাকবেন। মুনাফার নির্দিষ্ট অংশ তহবিলে জমা থাকবে। লগ্নিকারীদের স্বার্থের কথা ভেবে তৈরি হবে সনদ। কিন্তু বিরোধী-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের তোপ, বিমা সংস্থায় কোটি কোটি মানুষের পুঁজি জমা থাকে অনিশ্চিত সময়ের সুরক্ষাকবচ হিসেবে। অথচ সরকারি ছত্রছায়া সরিয়ে কী অবলীলায় আমজনতাকে আরও বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিতে চাইছে সরকার।

সরকারের যুক্তি, সংস্থাগুলিতে নতুন পুঁজি আসবে। ফলে বিমার আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যা ও সাধারণ মানুষের বিমার পরিমাণ বাড়বে। বিশেষত দেশে এখন জীবন বিমার প্রিমিয়ামের পরিমাণ যেখানে জিডিপি-র মাত্র ৩.৬%। আন্তর্জাতিক গড়ের তুলনায় অনেক কম। সাধারণ বিমায় ছবিটা আরও খারাপ।

নিজেদের প্রথম দফায় ২০১৫ সালে মোদী সরকার বিমায় বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ২৬% থেকে বাড়িয়ে ৪৯% করেছিল। তখনও তাদের যুক্তি ছিল, বিদেশি লগ্নি এলে দেশে বিমার পরিধি বাড়বে। সেই সময় বহু বিদেশি সংস্থা দেশীয় সংস্থার সঙ্গে জোটও বাঁধে। কিন্তু বিমা সংস্থার পুঁজি তেমন বাড়েনি। ২০২০ সালের মার্চের হিসেবে, ২৩টি জীবন বিমা সংস্থায় গড় বিদেশি লগ্নির হার মাত্র ৩৭.৪১%। মাত্র ন’টি বেসরকারি জীবন বিমা সংস্থায় বিদেশি লগ্নি ৪৯% ছুঁয়েছে। ২১টি সাধারণ বিমা সংস্থায় তার গড় মাত্র ২৮ শতাংশের ঘরে। অর্থ মন্ত্রকের আশা, নিয়ন্ত্রণ হাতে পেলে পুঁজি ঢালবে বিদেশি সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন