যথেষ্ট নয় অনাদায়ী ঋণ সামাল দিতে

ক্ষতির আঁচে পুড়ে খাক কেন্দ্রের পুঁজি

শেয়ার বাজার থেকে শুরু করে শিল্পমহল— সকলেই এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, এই পুঁজির জোগানের ফলে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা বেশ খানিকটা পরিষ্কার হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

২ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে এই বিপুল অঙ্কের পুঁজি জোগানোর কথা কেন্দ্র যখন ঘোষণা করেছিল, তখন অনেকেই মনে করেছিলেন এতে খানিকটা অন্তত হিল্লে হবে ব্যাঙ্কগুলির। শেয়ার বাজার থেকে শুরু করে শিল্পমহল— সকলেই এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, এই পুঁজির জোগানের ফলে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা বেশ খানিকটা পরিষ্কার হবে। জুঝতে সুবিধা হবে অনুৎপাদক সম্পদের সঙ্গে। ফলে ঋণ পাবে ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি। কিন্তু সাত মাসের মধ্যেই অনেকটা বদলে গিয়েছে সেই ছবি। পাহাড়প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদের চাপে একের পর এক ব্যাঙ্ক এমন বিপুল লোকসানের খাদে পড়ছে যে, সরকার ঘোষিত সেই বিপুল মূলধনকেই এখন নগণ্য মনে হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্ক এবং পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)-সহ ২১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে অধিকাংশই ক্ষতির মুখে পড়েছে। নীরব মোদী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পিএনবি-র ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ১৩,৪১৭ কোটি টাকা। মুনাফা হয়েছে মাত্র দু’টির।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যে দেশে গাড়ি-বাড়ি কেনা থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক কাজ— সব কিছুর সঙ্গেই ব্যাঙ্ক গভীর ভাবে জড়িত, সেখানে এই পরিস্থিতি বিপজ্জনক। সবচেয়ে সমস্যা ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলির। কারণ, ব্যাঙ্কের ঘর থেকে ধার পেতে সব থেকে বেশি মুশকিলে পড়ছে তারাই। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানের উপরেও। কারণ, কাজের সুযোগ সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় ওই শিল্পের সূত্রেই।

Advertisement

এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় আর্থিক পরিষেবা সচিব রাজীব কুমারের আশ্বাস, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ন্যূনতম পুঁজির অভাব হবে না। কেন্দ্র সেই সংস্থান করবে। তবে তিনি এ কথাও বলেন যে, ব্যাঙ্কের খাতা পরিষ্কার করতে গিয়ে আগামী একটি বা দু’টি ত্রৈমাসিকে আরও কিছুটা ক্ষতির ব্যথা সহ্য করতে হতে পারে। ফলে অনেকেই মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা আরও কিছুটা বাড়তে পারে। সেই খাতে সংস্থান করতে গিয়ে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ব্যাঙ্কগুলি। কুমার সেই ইঙ্গিতই দিয়ে রাখছেন।

কেন্দ্রের আশা, দেউলিয়া বিধির দৌলতে অনাদায়ী ঋণের বোঝা দ্রুত কমবে। কিন্তু কবে সেই ‘অচ্ছে দিন’ আসবে, তার উত্তর এখনও নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন