একই ছবি চিনের সোনা বাজারে

চাহিদায় ভাটা, ভারত তাকিয়ে দেবীপক্ষের দিকে

চাহিদা তলানিতে। গত চার সপ্তাহ ধরে কমের দিকে দামও। ঘুরে দাঁড়াতে এ দেশে সোনার বাজার এখন তাকিয়ে দেবীপক্ষের দিকেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪২
Share:

চাহিদা তলানিতে। গত চার সপ্তাহ ধরে কমের দিকে দামও। ঘুরে দাঁড়াতে এ দেশে সোনার বাজার এখন তাকিয়ে দেবীপক্ষের দিকেই।

Advertisement

অনেকটা একই রকম ছবি চিনের বাজারে। অর্থনীতি টলমল। সোনার চাহিদায় ভাটা। ফলে তার দাম সে ভাবে ওঠার লক্ষণ নেই সেখানেও। তবে চিনা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আশা, সদ্য শুরু হওয়া ছুটির মরসুমে কিছুটা হাত খুলে খরচ করবেন সাধারণ মানুষ। কপাল ফিরবে সোনারও।

সোনার গয়নার চাহিদার নিরিখে এই দুই পড়শি মুলুকের ধারেকাছেও নেই আর কোনও দেশ। ফি বছর বিশ্বে যত সোনা বিক্রি হয়, তার অর্ধেকই আসে চিন আর ভারতের বাজারে। তাই সব থেকে বেশি চাহিদার দুই দেশে একসঙ্গে এমন ভাটা সোনার দরের পায়ে কিছুটা শিকল পড়িয়েছে এশীয় বাজারেও।

Advertisement

হালফিলে আন্তর্জাতিক আঙিনায় শুধু গয়নার বাজারে নয়, লগ্নির হাতিয়ার হিসেবেও কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে সোনা। একে চিনা অর্থনীতির হাল তেমন সুবিধার নয়। পেন্ডুলামের মতো দুলছে ইউরোপ। তার উপর এ বছরের মধ্যেই সুদ বাড়ানোর সম্ভাবনার কথা বলে রেখেছে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শেষমেশ সেখানে সুদ বাড়লে বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে লগ্নির নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে আমেরিকার সরকারি ঋণপত্রকে বেছে নিতে পারেন অনেক বিনিয়োগকারীই। সে ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারে সোনার দর আরও নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা। মার্কিন মুলুকে নতুন কাজের সুযোগ প্রত্যাশিত হারে না-বাড়ায় শুক্রবার অবশ্য সেখানে বেড়েছে সোনার দাম।

এই অবস্থায় মহালয়ার ভোরে দেবীপক্ষের সূচনার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন এ দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কারণ, এখন চলছে পিতৃপক্ষ। সোনা কেনার জন্য যা অশুভ বলে অনেকের বিশ্বাস। আর এর পরেই আসছে ‘শুভ’ দেবীপক্ষ। তার হাত ধরে ভারত ঢুকে পড়বে উৎসব আর বিয়ের মরসুমে। শারদ উৎসব, দ্বীপাবলী, তার কিছু দিন পরে বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ। এই সময়ে সাধারণত শাড়ি-জামা-গয়নার পিছনে বাড়তি দু’পয়সা খরচ করেন সাধারণ মানুষ। ফলে দেবীপক্ষ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবের মরসুমেই সোনার বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে এ দেশের ব্যবসায়ীদের আশা।

মুম্বই জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কুমার জৈনের কথায়, ‘‘দাম নাগালের মধ্যে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পিতৃপক্ষ চলায় সোনা কিনছেন না অনেকে।’’ কেউ কেউ মনে করছেন, সোনা কম বিক্রি হওয়ার অন্যতম কারণ দেশে অনেক জায়গায় কম বৃষ্টিপাত। এর জেরে বিশেষত গ্রামের মানুষের মধ্যে সোনার চাহিদা কমেছে। কিছু জনের আবার বিশ্লেষণ, জুলাইয়ে বিশ্ব বাজারে সোনার দর সাড়ে পাঁচ বছরের তলানিতে ঠেকেছিল। তার পর থেকে বেশি সোনা আমদানি হওয়ায় এই সমস্যা। এই সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে সেই দেবীপক্ষের দিকেই তাকিয়ে ভারতের সোনা-বাজার।

ছুটি আর উৎসবের দিকে তাকিয়ে চিনও। তাদের ছুটির মরসুম ‘গোল্ডেন উইক’ শুরু হয়েছে সদ্য। এই সময় কেনাকাটা করেন, বেড়াতে যান লক্ষ লক্ষ চিনা। উৎসবের এই মেজাজ থাকে চিনা নববর্ষ পর্যন্ত। তাই ভাটা কাটিয়ে সোনার বাজারে জোয়ার আসার জন্য এখন উৎসবের মরসুমেরই অপেক্ষায় দু’দেশের ব্যবসায়ীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement