সাবধানি প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষ

স্বপরিচালিত তহবিলে বাড়তি পেনশনে ‘না’

পিএফ কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ওই সব ‘এগজেম্পটেড’ সংস্থার পিএফের টাকা হাতে পান না তাঁরা। পান শুধু পেনশন খাতে কেটে রাখা টাকা।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

কর্মীদের পেনশন প্রকল্প নিয়ে এ বার আরও বেশি সাবধানি প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) কর্তৃপক্ষ। পিএফ তহবিল নিজেরাই পরিচালনা করে যে-সব সংস্থা, সেখানকার কর্মীরা চাইলেই সংস্থা এই পেনশনের অঙ্ক বাড়াতে বেতন থেকে অতিরিক্ত টাকা কাটতে পারবে না।

Advertisement

পিএফ কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ওই সব ‘এগজেম্পটেড’ সংস্থার পিএফের টাকা হাতে পান না তাঁরা। পান শুধু পেনশন খাতে কেটে রাখা টাকা। তাই বাড়তি পেনশনের দায় নিতেও নারাজ তাঁরা। কারণ, এই খাতে খরচ আর বাড়াতে চান না কর্তৃপক্ষ। তবে যে-সব সংস্থার প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিল পুরোটাই এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিচালনা করে, (‘আনএগজেম্পটেড’) তাদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে আপত্তি ওঠেনি। তারা পিএফ ও পেনশন দু’টি খাতে কাটা টাকাই সরকারের ঘরে পিএফ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়। উল্লেখ্য, পিএফের পেনশন বাড়াতে ওই খাতে বেশি টাকা বেতন থেকে কাটানোর সুযোগ কর্মীদের দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। সংস্থাগুলির প্রতি শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

আনএগজেম্পটেড সংস্থায় কর্মীদের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের উপর ১২% হারে (চটকল সহ কিছু সংস্থায় ১%) কর্তৃপক্ষ বাধ্যতামূলক ভাবে পিএফ খাতে টাকা জমা দেন। কর্মীদের কাছ থেকেও ওই ১২ অথবা ১০%টাকা কাটা হয়। শুধু কর্তৃপক্ষের দেয় অংশ থেকে ৮.৩৩% জমা পড়ে পেনশন খাতে। একজেম্পটেড ফান্ড শুধুই পেনশন খাতে কেটে নেওয়া টাকা ওই কর্তৃপক্ষকে দেয়, যা হিসেব করা হয় ১৫ হাজার টাকার উপর ৮.৩৩% হিসেবেই। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যে-সব সংস্থায় পুরো বেতনের উপর পিএফ দেন কর্তৃপক্ষ, তাঁদের পেনশন খাতেও ৮.৩৩% হারে পুরো বেতনের উপরই টাকা কেটে পিএফ দফতরে জমা দিতে হবে। আর এখানেই স্বপরিচালিত সংস্থায় বাড়তি বোঝা নিতে আপত্তি পিএফ কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

কেন্দ্রীয় প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার ভিপি জয় বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শুধু আনএগজেম্পটেড ফান্ডের জন্যই।’’ পিএফ কর্তৃপক্ষ আরও যুক্তি দিয়েছেন, বাড়তি পেনশন পেতে হলে প্রথমত, কর্তৃপক্ষকে রাজি হতে হবে কর্মীর মাসিক পুরো বেতনের ভিত্তিতে পিএফ কাটতে। দ্বিতীয়ত, কর্মীকে কর্তৃপক্ষকে লিখে জানাতে হবে, তিনি পেনশনে বাড়তি টাকা কাটাতে রাজি।

তবে এগজেম্পটেড সংস্থার জন্য ওই ব্যাখ্যায় পিএফের কেন্দ্রীয় অছি পরিষদে ইউনিয়ন নেতারা প্রতিবাদ জানান। এআইইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক এবং পিএফের অছি পরিষদের সদস্য শঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘দুই শ্রেণির সংস্থার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম চলে না।’’

চালু আইন

সরকার পরিচালিত তহবিল

•• কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া পিএফ কাটার জন্য ধরা হয় মূল বেতনের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা

•• কর্মীর থেকে কাটা হয় তার ১২% (চটকল ও কিছু সংস্থায় ১০%)

•• নিয়োগকারীও দেন ১২%

•• তার মধ্যে পেনশনে যায় ৮.৩৩%

•• সঙ্গে কেন্দ্রের অনুদান ১.১৬%

স্বপরিচালিত তহবিল

•• এ ক্ষেত্রে তহবিল পরিচালনা সরকার করে না

•• পিএফের টাকা খাটায় সংস্থা নিজেই

•• সরকারের ঘরে জমা পড়ে শুধু পেনশনের টাকা

সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশ

•• কর্মীরা চাইলে বাড়তি টাকা কাটাতে পারবেন পিএফের পেনশন খাতে

•• সংস্থা ১৫ হাজার টাকার বদলে পুরো বেতনের উপর পিএফ হিসেব করলে কর্মী যদি চান পেনশনও কাটাতে হবে একই ভাবে

•• সে ক্ষেত্রে পুরো বেতনের ৮.৩৩% পেনশন খাতে কেটে জমা দিতে হবে সরকারি তহবিলে

আপত্তি যেখানে

•• স্বপরিচালিত সংস্থার বাড়তি পেনশনের দায় ঘাড়ে নিতে নারাজ কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন