NPCI

নির্দেশ সার, ভর্তুকি শেষ অ্যাকাউন্টেই

রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির জন্য গ্রাহকের আধার নম্বর বাধ্যতামূলক। তিনি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার জুড়লে, এনপিসিআই মারফত ভর্তুকির টাকা সেখানে যায়।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত ও প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ১৯:৫৮
Share:

রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির জন্য গ্রাহকের আধার নম্বর বাধ্যতামূলক।

একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি যাতে গ্রাহকের পছন্দেরটিতেই জমা পড়ে, ব্যাঙ্কগুলিকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে এই লেনদেনের দায়িত্বে থাকা ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন (এনপিসিআই)। তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও তৈরি করতে বলেছে তারা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সেই নির্দেশই সার। ওই ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি অধিকাংশ ব্যাঙ্কই। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভর্তুকি জমা পড়ছে যে অ্যাকাউন্টে শেষ আধার নম্বর যুক্ত করা হয়েছে, সেইটিতে। যা নিয়ে অযথা খোঁজাখুঁজি আর হয়রানির অভিযোগ তুলছেন অনেক গ্রাহক।

Advertisement

রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির জন্য গ্রাহকের আধার নম্বর বাধ্যতামূলক। তিনি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার জুড়লে, এনপিসিআই মারফত ভর্তুকির টাকা সেখানে যায়। তাঁর একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলে এবং সেগুলির সঙ্গে তিনি আধার জুড়লে, নিয়ম ছিল শেষ আধার নম্বর জোড়া অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি জমা হওয়ার।

অর্থাৎ, কেউ হয়তো ‘ক’ অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা পান। এ বার তিনি ‘খ’ অ্যাকাউন্টের সঙ্গে (যা জয়েন্ট অ্যাকাউন্টও হতে পারে) আধার নম্বর জুড়লেন। সে ক্ষেত্রে ‘ক’-এর বদলে ‘খ’-তে ভর্তুকি পাওয়া শুরু হয়। কিন্তু আপত্তি ওঠে।

Advertisement

অভিযোগ, যাঁরা নিয়ম সম্পর্কে ওয়াকবিহাল নন, তাঁরা গোড়ায় পুরনো অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা না দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কেউ হয়তো আবার একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলেও, নির্দিষ্ট একটি ব্যবহার করেন বেশি। সেটিতে লেনদেনে বেশি স্বচ্ছন্দ। কেউ আবার শেষ যেটিতে আধার জুড়েছেন, সেটি হয়তো জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট। কোনও নির্দিষ্ট কারণে খোলা। তিনি হয়তো সেটি নিয়মিত ব্যবহারই করেন না। তার উপর এয়ারটেল পেমেন্টস ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে ভর্তুকির টাকা জমা নেওয়ার অভিযোগ ওঠার বিষয়টি তো আছেই। এই সমস্ত কারণেই পছন্দের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি চান গ্রাহকরা।

ব্যাঙ্কিং শিল্প সূত্রে খবর, ডিসেম্বরের শেষে এনপিসিআই তাই এ ব্যাপারে গ্রাহকদের সম্মতি নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে পৃথক ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেয়। ঠিক হয়, সম্মতির তথ্য এনপিসিআইয়ের তথ্য ভাণ্ডারে জুড়ে দেওয়া হবে। সম্মতির তিন দিন পরে তাঁর সেই অ্যাকাউন্ট ভর্তুকির টাকা জমা পড়ার উপযুক্ত হবে। সম্মতি না দিলে, আগের অ্যাকাউন্টেই তা জমা পড়বে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ ব্যাঙ্কই নতুন ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক কর্তা জানান, তাঁরা কাজ শুরু করছেন।

আইডিএফসি ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক প্রধান স্বরজিৎ মণ্ডল অবশ্য জানান, এপ্রিল থেকে গ্রাহকের সম্মতি দেওয়া অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি জমা পড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘এ জন্য আধার বাধ্যতামূলক। কিন্তু এনপিসিআই জানিয়েছে, ভর্তুকির অ্যাকাউন্ট গ্রাহকের পছন্দের উপরেই নির্ভর করবে।’’

তেল সংস্থা ও ডিলারদের দাবি, বেশির ভাগ ব্যাঙ্কে পুরনো নিয়ম চালু থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ইন্ডেন এলপিজি ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা বিজনবিহারী বিশ্বাস জানান, অনেক গ্রাহকই তাঁদের কাছে ভর্তুকি কেন জমা পড়েনি, তা জানতে চাইছেন। অথচ তা হয়তো জমা পড়েছে সদ্য আধার নম্বর যোগ করা নতুন অ্যাকাউন্টে।

এখন কত দিনে ব্যাঙ্কগুলি এ জন্য তৈরি হয়, সেটিই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন