পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। সেই কাণ্ডের পরে দেশ জুড়ে টান পড়েছে হিরের চাহিদায়। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, সম্পূর্ণ উল্টো দিকে হেঁটেছে কলকাতা। হিরের গয়নার চাহিদা বাড়ার গতির নিরিখে দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরকে পেছনে ফেলেছে এই শহর। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ভারতে হিরের চাহিদা কমলেও বাজার হিসেবে কলকাতায় তার বৃদ্ধির হার কার্যত বিশ্ব বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে এখন।
সোনার মতো না হলেও, গত কয়েক বছর ধরেই হিরের গয়নার কদর বাড়ছে কলকাতার বাজারে। সাবেকি সোনার গয়নার পাশাপাশি ছোট-বড় দোকানগুলিও তাদের বিক্রির ভাঁড়ারে ঠাঁই দিচ্ছে একে। কিন্তু সূত্রের দাবি, নীরব কাণ্ডের পরেও যে সেই কদর বাড়বে এটা বোঝা যায়নি। বরং পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ শহরে ব্যবসা বেড়েছে প্রায় ১৫% হারে।
তবে এই বাড়বাড়ন্ত মূলত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের হাত ধরেই। যেমন ফরেভারমার্কের ব্যবসা শহরে ১০০% বেড়েছে বলে দাবি ভারতে সংস্থার প্রেসিডেন্ট সচিন জৈনের। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার এই বাজারের টানেই নিজস্ব বিপণি খুলছি। বেঙ্গালুরুর পরে কলকাতাকে দ্বিতীয় গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ এই বৃদ্ধির হার।’’ একই সুরে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শুভঙ্কর সেন জানান, ব্র্যান্ডের প্রতি বরাবর আস্থা কলকাতার ক্রেতার। নীরব কাণ্ড তাতে টোল ফেলতে পারেনি।
নীরব কাণ্ডের পরে দেশে মার খাচ্ছে হিরের চাহিদা, জানাচ্ছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সমীক্ষা। এক লাফে ১০-১৫% চাহিদা কমেছে। নীরবদের বেআইনি কার্যকলাপ প্রকাশ্যে আসতেই ৬৫% হিরের গয়নার ব্যবসায়ী সোনা ও রুপোর দিকে ঝুঁকেছেন।
ভারতের এই ছবির সঙ্গে অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারের মিল নেই। হিরে সংস্থা ডি বিয়ার্সের সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্ব বাজারে মূলত আমেরিকার পালে ভর দিয়েই ২০১৭ সালে হিরের চাহিদা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চূড়া ছুঁয়েছে। দাঁড়িয়েছে ৮২০০ কোটি ডলার। ২০১৬-র তুলনায় ২% বেশি।