বিশাল সিক্কা
সকলকে চমকে ইনফোসিসের এমডি ও সিইও-র পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানালেন বিশাল সিক্কা। নাম না-করেও অভিযোগের আঙুল তুললেন সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রাক্তন কর্ণধার এন আর নারায়ণমূর্তির দিকে। সিক্কার পাশে দাঁড়িয়ে মূর্তিকে বিঁধল ইনফোসিসের পরিচালন পর্ষদও।
টাটাদের সঙ্গে তেতো লড়াইয়ে সম্প্রতি শীর্ষ পদ থেকে সরতে হয় সাইরাস মিস্ত্রিকে। প্রতিষ্ঠাতাদের ‘টানা আক্রমণে’ এ বার সরে দাঁড়ালেন সিক্কাও। তবে আগামী মার্চ পর্যন্ত এগ্জিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন তিনি। বছরে এক ডলার বেতনে। তার মধ্যে খুঁজে নেওয়া হবে নতুন কর্ণধারকে।
তিক্ততা যে ইনফোসিসেও কী পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা স্পষ্ট এ দিন দু’পক্ষের বিবৃতিতেই। সিক্কা জানান, ‘‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বিদ্বেষপ্রসূত ও ক্রমাগত ব্যক্তিগত আক্রমণেই এই সিদ্ধান্ত।’’ অভিযোগের তির স্পষ্টতই মূর্তির দিকে। সুর এক ধাপ চড়িয়ে পর্ষদ বলেছে, বারবার অন্যায় আবদার করেছেন নারায়ণমূর্তি! আর মূর্তির প্রতিক্রিয়া, এই অভিযোগে তিনি ক্ষুব্ধ। এর উত্তর দিতে তাঁর রুচিতে বাঁধে। তবে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় সব কিছু খোলসা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। শিল্পমহল বলছে, টাটা-মিস্ত্রির মতো বিবৃতির লড়াই এখানেও জারি থাকার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: বাজারে এল নোকিয়া ৮, জেনে নিন দাম ও ফিচার
ইনফোসিসের হাল ধরতে ২০১৪-এর জুনে সিক্কাকে এনেছিলেন নারায়ণমূর্তিরাই। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি সিক্কা তখন জার্মান তথ্যপ্রযুক্তি বহুজাতিক স্যাপ-এর চিফ টেকনোলজি অফিসার। সংশ্লিষ্ট শিল্পের মতে, সংস্থার ব্যবসার খোলনলচে বদলেরও চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু বারবার সংস্থা পরিচালনা নিয়ে পর্ষদের দিকে তোপ দেগে গিয়েছেন নারায়ণমূর্তিরা। কখনও সিক্কার বিপুল বেতন বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তো কখনও তোপ দাগা হয়েছে সংস্থা ছাড়ার সময়ে প্রাক্তন সিএফও রাজীব বনসলকে বিপুল টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। বিতর্ক তৈরি হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হার স্ত্রীকে পর্ষদে আনা নিয়ে। শোনা গিয়েছিল, পর্ষদে রাজনীতির ছোঁয়াচ না কি প্রতিষ্ঠাতারা চাননি। খরচ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এমনকী সিক্কার চার্টার্ড ফ্লাইট ব্যবহারের হিসেব পর্যন্ত দিতে হয়েছে ইনফোসিসকে!
সূত্রের খবর, সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেক হয়ে দাঁড়াল মূর্তির একটি চিঠি। সংবাদমাধ্যমের হাতে পড়া সেই চিঠিতে নাকি মূর্তি বলেছিলেন, প্রযুক্তিবিদ হিসেবে ভাল হলেও, সিইও হিসেবে সিক্কা অচল। তাঁকে ঘিরে নাকি ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বোর্ডের অন্দরেই। সিক্কার দাবি, ‘‘নাগাড়ে এই সমস্ত অভিযোগ ও প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তিনি ক্লান্ত। সরে যাওয়া সেই কারণেই।’’