Demonetization

বড় নোট বদলের প্রথম দিনে ভিড় কম, ধন্দ বেশি

যাঁরা ২০০০ টাকার নোট ভাঙানোর জন্য ব্যাঙ্কে হাজির হয়েছিলেন তাঁদের একাংশের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত ধন্দে ব্যাঙ্কের বহু কর্মী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৫:১২
Share:

দেশ জুড়ে মঙ্গলবার ঢিমেতালেই শুরু হল ২০০০ টাকার নোট বদল এবং অ্যাকাউন্টে জমা। ফাইল চিত্র।

দেশ জুড়ে মঙ্গলবার ঢিমেতালেই শুরু হল ২০০০ টাকার নোট বদল এবং অ্যাকাউন্টে জমা। কোনও ব্যাঙ্কের শাখায় তেমন হুড়োহুড়ি দেখা যায়নি। বরং আর পাঁচটা দিনের মতো স্বাভাবিক গতিতে চলেছে ব্যাঙ্কের নানা কাজ। তবে তার মধ্যেই যাঁরা ২০০০ টাকার নোট ভাঙানোর জন্য ব্যাঙ্কে হাজির হয়েছিলেন তাঁদের একাংশের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত ধন্দে ব্যাঙ্কের বহু কর্মী। সরকারের দাবি ছিল, নোট বদলের জন্য কোনও পরিচয়ের প্রমাণ কিংবা ফর্ম পূরণের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বেশ কিছু শাখায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সচিত্র পরিচয়পত্র দাবি করেন। কিছু ক্ষেত্রে ফর্মও পূরণ করতে বলা হয়। এমনকি নিজের অ্যাকাউন্টে জমার ক্ষেত্রে কেওয়াইসি-সহ চালু নিয়ম ছাড়া আর কোনও বাধানিষেধ নেই বলে জানানো হলেও, কয়েকটি জায়গায় ফর্ম ভরতে বলা হয় তাঁদেরও। ফলে নোট জমা ও বদলের জন্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভিড়ভাট্টা কম হলেও, বিভ্রান্তির কারণে তাঁরা হয়রানির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ অনেক গ্রাহকের।

Advertisement

হুগলির চুঁচুড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, গোটা বিষয়টিতে স্বচ্ছতা রাখতে কিছু নিজস্ব নিয়ম চালু করাই যায়। অনেক ক্ষেত্রে আবার সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাকাউন্ট না থাকলে নোট বদলাতেও অস্বীকার করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সেই শাখায় অ্যাকাউন্ট থাকলে বদলের পরিবর্তে তাতে টাকা জমা দিতে বলা হচ্ছে। অনেক ব্যাঙ্কে নোট বদলাতে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নথিভুক্তি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।

বাড়ি তৈরির জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বারাসত শাখা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মিহিরকুমার লাহা। চলতি মাসের প্রথম দিকে ব্যাঙ্ক ঋণের চতুর্থ কিস্তির টাকা দেয় তাঁকে। যার মধ্যে ২০টির বেশি ২০০০ টাকার নোট ছিল। সেই টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মিহির। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক টাকা দিয়েছে। এখন তা বদলাতে আবার ব্যাঙ্কে যেতে হচ্ছে। এই গরমে কাজের মধ্যে ব্যাঙ্কে যাব কখন, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ দিন শহরাঞ্চলের গ্রাহকদের মধ্যে ২০০০ টাকার নোট বদল বা জমা দেওয়ার কিছুটা আগ্রহ দেখা গেলেও জেলাগুলিতে এর জন্য ভিড় ছিল খুবই কম। কোথাও তেমন লাইন পড়েছে বলেও খবর নেই। ব্যাঙ্ক কর্তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর পাঁচশো-হাজার টাকার নোট বাতিলের সঙ্গে এ বার ২০০০-এর নোট প্রত্যাহারের তুলনা করা ভুল। কারণ, সে বার রাতারাতি দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনের নোট স্রেফ কাগজ হয়ে গিয়েছিল। ৫০০ এবং ১০০০ টাকা মিলে বাজারে চালু থাকা মোট নোটের ৮৬ শতাংশই উবে যায়। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হন সাধারণ মানুষ। সেখানে এখন বাজারে চালু থাকা মোট নোটের মাত্র ১০.৪% ২০০০ টাকা। তার উপর এর আইনি বৈধতা এখনও বজায় রাখা হয়েছে। সর্বোপরি ২০১৬ সালে নোট বদল বা জমা দেওয়ার জন্য ৫০ দিন সময় পেয়েছিলেন মানুষ। এ বার হাতে ১৩১ দিন। অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

তবে ব্যাঙ্কের গ্রাহক-সহ বিভিন্ন মহল মনে করেন, ২০০০ টাকার নোট বদল বা জমা নিয়ে যে সব নিয়ম মানার নির্দেশ আরবিআই এবং কেন্দ্র দিয়েছে, সেগুলি ঠিক ভাবে মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। না হলে মানুষ এ বারও হেনস্থার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা। তাদের মতে, নির্দেশ মাথায় রেখে এই চড়া গরমে কেউ ব্যাঙ্কে গিয়ে যদি দেখেন যে অতিরিক্ত নথি চাওয়া হচ্ছে, তা হলে তাঁকে ফিরে আসার হয়রানি পোহাতে হবে। কারণ, সকলে সব সময়ে পরিচয়পত্র সঙ্গে না-ও রাখতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন