কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।—ফাইল চিত্র।
ভোটের আবহে মোদী সরকারের দিকে ধেয়ে আসছে একের পর ‘গুগলি’। কখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে সঞ্চিত টাকার ভাগ পাওয়ার দাবি নিয়ে, কখনও নোটবন্দি, কখনও বা শীর্ষ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজিয়াকে লক্ষ্য করে।
সম্প্রতি কেন্দ্র দাবি করেছিল, শীর্ষ ব্যাঙ্ককে আদৌ ১ বা ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে দেওয়ার কথা বলেনি দিল্লি। সঞ্চিত টাকার কতটা সরকারি কোষাগারে পাঠানো উচিত, শুধু সেই নিয়মে বদল চেয়েছে। রবিবার এই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বললেন, সরকারের মেয়াদ শেষ হতে বাকি মাত্র চার মাস। চলতি অর্থবর্ষে টাকার দরকার যদি আর না-ই থাকে, তা হলে এখনই কেন ওই বিধি বদলের তাড়াহুড়ো! বিশেষ করে গত ৪ বছর ৬ মাসে যখন তা করা হল না। টুইটে তাঁর অভিযোগ, সরকার তাদের আর্থিক হিসেব-নিকেশে খামতি না থাকার দাবি করলেও, আসলে বিপদে পড়েই এ ভাবে টাকার জন্য চাপ তৈরি করছে তারা।
এ দিকে প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজনের পরে এ বার নোটবন্দির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুও। এক টুইটে তাঁর দাবি, দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় জাল নোট ধরতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত অর্থহীন। তিনি বলেন, ‘‘জাল নোট অর্থনীতির ক্ষতি করে ঠিকই। কিন্তু যখন সেগুলি আর্থিক ব্যবস্থায় ঢোকে, ঠিক তখনই। কিছু মানুষ জাল নোট ছাপান ও কাজে লাগান পণ্য, সোনা ও সম্পত্তি কিনতে। তবে তার পরে সেই সব জাল নোট খুঁজে বার করতে ও বদলে দিতে আচমকা অর্থনীতির গতিকে রুদ্ধ করে দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই।’’
সম্প্রতি রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্য আর ভোট-বছরের খরচ সামাল দিতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের থেকে কেন্দ্র ৩.৬ লক্ষ কোটি দাবি করেছে বলে খবর মিলেছিল। এই প্রসঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর আর গাঁধীও বলেন, বার্ষিক অডিটের পরেই কেন্দ্রের প্রাপ্য অংশ পাঠানো হয়।
পাশাপাশি শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতার প্রশ্নে কেন্দ্র-রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাজিয়া নিয়ে গাঁধীর মত, অনেক বিষয়কে স্বল্প মেয়াদি লক্ষ্যের কথা মাথায় রেখে বিচার করে কেন্দ্র, যেখানে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ভাবতেই হয় অর্থনীতির অন্তর্বর্তী ও দীর্ঘ মেয়াদি ছবির কথা। ফলে এটা দু’পক্ষের মতের ফারাক ছাড়া কিছু নয়। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরিই হয় না যদি সরকার ও আরবিআই নিয়মিত নিজেদের মধ্যে কথা বলে। এই বিতর্কে এটারই ইঙ্গিত যে, সেই পদ্ধতিতে গণ্ডগোল আছে।’’