যাত্রী নিজে বিমান টিকিট বাতিল করলে, তাঁকে গুনতে হওয়া টাকার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার নিয়ম ১ অগস্ট থেকেই চালু হবে বলে জানিয়ে দিলেন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু। একই কথা জানিয়েছে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-ও।
একই সঙ্গে তাদের ঘোষণা, ওই অঙ্ক ফেরত দিতে আলাদা করে কোনও টাকা নিতে পারবে না বিমান সংস্থাগুলি। কোনও টিকিট বাতিল করতে খরচ কত পড়বে, তা জানাতে হবে স্পষ্ট ভাবে। আর কোনও পরিস্থিতিতেই তার পরিমাণ মূল ভাড়া ও ফুয়েল সারচার্জের যোগফলের বেশি হওয়া চলবে না।
অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে টিকিটের দামের উপর নেওয়া সমস্ত কর, ইউজার ডেভেলপমেন্ট ফি, বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি, যাত্রী পরিষেবা উন্নয়ন ফি সবই ফেরত পাওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট যাত্রীর। শুধু টিকিট বাতিলের ক্ষেত্রে নয়, কেনার পরে যাত্রী সেটি ব্যবহার না-করলে কিংবা উড়ান না-ধরলেও ওই সমস্ত টাকা তাঁকে ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এমনকী বিশেষ ভাড়া বা প্রকল্পে কেনা টিকিটের ক্ষেত্রেও (যেখানে মূল ভাড়া ফেরত পাওয়া যায় না) এই সমস্ত কর ও ফি-এর টাকা ফেরাতে হবে। টাকা ফেরতের কাজ সংস্থাকে সারতে হবে ৩০টি কাজের দিনের মধ্যে।
যাঁরা পোর্টাল কিংবা ট্র্যাভেল এজেন্টের কাছ থেকে টিকিট কাটবেন, নতুন নিয়মে তাঁদের টাকা ফেরানোর দায়িত্বও বর্তাবে সংশ্লিষ্ট বিমান পরিবহণ সংস্থার উপর। উল্লেখ্য, এখন এজেন্টের কাছে টিকিট কাটলে, ফেরতের টাকা উদ্ধারের দায় যাত্রীর। তা ছাড়া, ক্রেতা নিজে থেকে ধরিয়ে দিলে, বাড়তি টাকা নেওয়া যাবে না টিকিটে নামের বানানে ভুল ঠিক করতেও।
টাকা ফেরতের বিষয়টি স্বচ্ছ করতে ডিজিসিএ-র নির্দেশ, তার অঙ্ক স্পষ্ট জানাতে হবে। কোন খাতে কী টাকা ফেরানো হল, উল্লেখ করতে হবে সেটিও। এ বিষয়ে তাদের নীতি ও ফেরতের অঙ্ক তুলতে হবে নিজেদের ওয়েবসাইটে। যাতে ক্রেতাদের কোনও ধোঁয়াশা না থাকে। বিদেশি বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলি অবশ্য টাকা ফেরাবে নিজেদের দেশের নিয়ম মেনেই।
উল্লেখ্য, টিকিট বাতিলে গুনতে হওয়া টাকার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া-সহ এক গুচ্ছ প্রস্তাব গত মাসেই পেশ করেছিল বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। রাজুর দাবি ছিল, যাত্রীদের অভিযোগ ও অসুবিধা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ। কিন্তু উল্টো দিকে, বিমান পরিবহণ বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এতে অসুবিধায় পড়বে ওই শিল্প। তাঁদের মতে, এত দিন দেনা আর লোকসানের বোঝায় নুয়ে থাকার পরে হালে সস্তা জ্বালানি ও চাঙ্গা হতে শুরু করা অর্থনীতির হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিমান পরিবহণ। কিন্তু নতুন নিয়মে তারা ফের আতান্তরে পড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা।