প্রতীকী ছবি।
পেট্রোল পাম্পেও এ বার বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ দিয়ে তেলের টাকা মেটানো যাবে। এ জন্য পাম্পে মোবাইল ফোন ব্যবহারের নিয়মও শিথিল করছে কেন্দ্র। তবে সুরক্ষার যুক্তিতে যথেচ্ছ মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু থাকবে সেখানে। ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, তিন সংস্থাই মেট্রো শহরগুলিতে তাদের পাম্পে এ সপ্তাহের মধ্যেই এই সুবিধা চালু করতে চায়।
নগদ ছাড়াও ব্যাঙ্কের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বরাবরই পাম্পে তেলের টাকা মেটাতে পারেন ক্রেতা। ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের জেরে নগদহীন লেনদেনে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। সেই সূত্রে, কার্ডের পাশাপাশি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের গুরুত্বও বাড়ছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ ছাড়াও মোবিকুইক, অক্সিজেন, পেটিএম-এর মতো কিছু বেসরকারি সংস্থার অ্যাপ বাজারে চালু রয়েছে, নোট বাতিলের পরে যাদের ব্যবসা ঊর্ধ্বমুখী। সব পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছে তেল সংস্থাগুলি।
কিন্তু তেল দাহ্য পদার্থ বলে নিরাপত্তার প্রশ্নে ২০০২ সালে পাম্পে মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। পাম্পের যে-মূল ট্যাঙ্কে (ট্যাঙ্ক ফার্ম) তেল রাখা হয়, সেখান থেকে বিভিন্ন গাড়িতে তা ভরা হয় ডিসপেন্সিং ইউনিট মারফত। সেগুলির কাছাকাছি মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে বাতাসে মিশে থাকা তেলের বাষ্প থেকে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। তাই সতর্কতা হিসেবে সার্বিক ভাবেই মোবাইলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এখন সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
ইন্ডিয়ান অয়েল সূত্রের খবর, পাম্পের ‘ডিসপেন্সিং ইউনিট’ কিংবা ‘ট্যাঙ্ক ফার্ম’ থেকে কমপক্ষে ৬ মিটারের (প্রায় ১৯.৭ ফুট) মধ্যে কোনও ভাবেই এই লেনদেন করা যাবে না। বস্তুত, মোবাইল অ্যাপ দিয়ে লেনদেনের জন্য পাম্পে ঢোকা বা বেরোনোর মুখে আলাদা কিয়স্ক করার কথা বলছে তেল সংস্থাগুলি। আবার মোবাইল অ্যাপে ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করেও সরাসরি টাকা পাঠানো যায়। তেল সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, নতুন নিয়মে কিউআর কোড-ও ওই দূরত্বের মধ্যে রাখা যাবে না। বস্তুত, ওই এলাকা জুড়ে ক্রেতা ও কর্মীরা মোবাইল ফোন ব্যবহারই করতে পারবেন না।
কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে চলার কথা জানালেও ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার সেন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমরা এর বিরুদ্ধে নই। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি যাতে ক্ষুণ্ণ না-হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি ক্রেতারা টাকা পাঠানোর পরে প্রযুক্তিগত সমস্যায় আমরা যদি তা না-পাই তা হলে তার দায়িত্ব কি তেল সংস্থাগুলি নেবে? এখন কার্ড ‘সোয়াইপ’ করলে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক থেকে লেনদেন পিছু একটা কমিশন পাই। মোবাইল ব্যবহার করলে অ্যাপ সংস্থাগুলিকেও তা দিতে হবে।’’
কার্ডের মতোই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার ক্রেতার সুবিধা করবে বলে আশাবাদী তেল সংস্থাগুলি। তবে লেনদেনের টাকা না-আসার সম্ভাবনা নিয়ে ডিলারদের উদ্বেগের প্রশ্নে তাদের বক্তব্য, সব লেনদেনেই ক্রেতা-বিক্রেতা, দু’পক্ষের মোবাইলে এসএমএস আসে। কার্ড সোয়াইপ করার পরেও লেনদেন সম্পূর্ণ না-হলে বা এসএমএস না-এলে এখন পাম্পে ক্রেতা নগদেই তেলের দাম দেন। তবে এমন ঘটনা নামমাত্র ঘটে। অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এসএমএস পাবেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই।