পুরনো নোট শেষ করতে আগাম বেতনের হিড়িক

সাধারণত মাস ফুরোনোর আগেই শেষ হয়ে যায় সুরতের বাসিন্দা সুজয় পালের বেতন। তবে পুরনো নোট বাতিল হওয়ার পরে অবস্থা বদলেছে। এ বার মাসের মাঝামাঝি পৌঁছেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা রয়েছে তাঁর!

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২২
Share:

সাধারণত মাস ফুরোনোর আগেই শেষ হয়ে যায় সুরতের বাসিন্দা সুজয় পালের বেতন। তবে পুরনো নোট বাতিল হওয়ার পরে অবস্থা বদলেছে। এ বার মাসের মাঝামাঝি পৌঁছেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা রয়েছে তাঁর! কারণ, বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুজয়বাবু একলপ্তে হাতে পেয়েছেন তিন মাসের অগ্রিম বেতন। ৭৫ হাজার টাকা। কোনও সংস্থা সরাসরি স্বীকার না-করলেও, এর অন্যতম কারণ বাতিল হওয়া পুরনো পাঁচশো ও হাজারের নোট শেষ করার তাগিদ।

Advertisement

একই ভাবে ‘কপাল খুলেছে’ বড়বাজারের বেসরকারি অফিসের কর্মী অরূপ সেনেরও। সংস্থা প্রায় ২০ বছরের পুরনো কর্মী অরূপবাবুকে মার্চ পর্যন্ত বেতন একসঙ্গে দিয়েছেন। অগ্রিম বেতনই শুধু নয়, বোনাস বাবদ পেয়েছেন আরও ৪০ হাজার টাকা।

নগদের আকালে নোটের এই অকালবর্ষণে ছাপোষা চাকুরিজীবীর খুশি হওয়ারই কথা। ঠিক যে ভাবে নগদের খরায় স্বস্তি পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের একাংশ। নোট সঙ্কটে জেরবার গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের সুরাহা দিতে নভেম্বরের বেতন থেকে নগদে ১০,০০০ আগাম তোলার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্র। এই সুবিধার দাবি তুলেছেন বহু রাজ্য সরকারি কর্মীও।

Advertisement

তবে সুজয়বাবুদের আগাম বেতনের খুশির সঙ্গে বিঁধে রয়েছে অস্বস্তির কাঁটা। মালিকরা যে বিনা কারণে হঠাৎ সদয় হননি, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাঁদের। তাঁরা বুঝছেন, পুরনো টাকা চালাতেই এই কৌশল। কিন্তু না-নিয়েও উপায় নেই। সুজয়বাবুর দাবি, সংস্থার মালিক খোলাখুলিই জানিয়েছেন টাকা এ ভাবে না নিলে ব্যবসা গুটিয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে চাকরি নিয়েই টানাটানি পড়বে। অরূপবাবুরও একই কথা।

বস্তুত, এ ভাবেই কর্মীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য খাতে অগ্রিম মিটিয়ে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের সংখ্যা কমাচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। আইন বাঁচিয়েই তাঁরা কালো টাকা সাদা করার এই প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলে জানান এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তাঁর মতে, যে যে খাতে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই হিসেব ঠিক করে দেখালে আয়কর বিভাগের রোষে পড়ার সমস্যা নেই।

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে কেন অগ্রিম দেওয়া হল? কারণ হিসেবে কর্মীদের বিয়ে, অসুস্থতা বা পড়াশোনার খরচের মতো ব্যক্তিগত প্রয়োজন দেখানো যেতে পারে। কিন্তু তা সংখ্যায় বেশি হলে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা শক্ত। মার্চ পর্যন্ত হিসেবের খাতা পরিষ্কার করার সময় আছে। সেই সুযোগ কতটা কাজে লাগানো হয়, এখন সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement