শিল্প তেমন জমি কাড়ছে না, দাবি বর্ধনের

বার্কলে-র এমেরিটাস অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন জানালেন, জমির মালিকানা পরিবর্তনের পরিসংখ্যান এ দেশের কোনও রাজ্যেই পাওয়া যায় না। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, মোট জমিহারা মানুষের ৫ শতাংশেরও কম জন তা খুইয়েছেন শিল্পের ধাক্কায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৫
Share:

প্রণব বর্ধন

শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণকে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনের ধাক্কায় বদলে গিয়েছে চৌত্রিশ বছরের শাসন। কিন্তু রাজ্যে যত মানুষ জমি হারান, তাঁদের মধ্যে কত জনের জমি শিল্পের জন্য অথবা উন্নয়নের অন্য প্রয়োজনে হাতছাড়া হয়েছে?

Advertisement

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, বার্কলে-র এমেরিটাস অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন জানালেন, জমির মালিকানা পরিবর্তনের পরিসংখ্যান এ দেশের কোনও রাজ্যেই পাওয়া যায় না। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, মোট জমিহারা মানুষের ৫ শতাংশেরও কম জন তা খুইয়েছেন শিল্পের ধাক্কায়। ৮৫ শতাংশের জমির মাপ ছোট হয়েছে সামাজিক কারণে, পরিবার ভাগ হয়ে যাওয়ায়।

বর্ধন জানাচ্ছেন, শিল্প যদি জমি বা পুরনো জীবিকা কেড়েও নেয় এবং সেই শিল্পে যদি জমিহারাদের ঠাঁই না-হয়, তা হলেও রাজ্যের অর্থনীতি চাঙ্গা থাকলে তাঁরা অসংগঠিত ক্ষেত্রে জীবিকা পেতে পারেন। গুজরাত, মহারাষ্ট্র বা তামিলনাড়ুতে এমনটাই হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওডিশায় আর্থিক বিকাশ যথেষ্ট হয়নি। ফলে কাজ কমেছে, জমিহারাদের বিপন্নতাও সেখানে বেশি। তবে অসংগঠিত ক্ষেত্র যে সংগঠিত আধুনিক শিল্পের সঙ্গে তুলনীয় নয়, সে কথা মনে করিয়ে দেন প্রণববাবু।

Advertisement

বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত দ্বিতীয় কল্যাণ সান্যাল স্মারক বক্তৃতায় ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম বা সর্বজনীন ন্যূনতম আয়ের ধারণাটি ব্যাখ্যা করেন বর্ধন। সব বাসিন্দার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বছরে নির্দিষ্ট টাকা দেওয়ার এই প্রস্তাব নিয়ে তিনি আগেও আলোচনা করেছেন। এই সামর্থ্য কি আদৌ ভারত সরকারের আছে? প্রণববাবু হিসেব কষে দেখান, প্রত্যেককে বছরে মাথাপিছু দশ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে রাজকোষে বিশেষ কোনও চাপ পড়বে না। অথচ মহিলা এবং প্রান্তিক পেশায় থাকা কিছু জনগোষ্ঠীর বিশেষ উপকার হবে।

সর্বজনীন মানে কি সকলেই তা পাবেন? প্রণববাবুর বক্তব্য, ধনীদের পক্ষে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত সহজ। কিন্তু পুলিশের পরিষেবা পাওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার তাঁদেরও আছে। সর্বজনীন আয়ের ক্ষেত্রেও সেই অধিকার তাঁদের থাকবে। তবে করের মাধ্যমে সেই টাকা তাঁদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা যায়। এবং তা করা উচিতও, মনে করিয়ে দেন প্রণববাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন