পরিকাঠামোয় ঘাটতি অথচ ডঙ্কা ডিজিটালের

পিএফের পেনশন নেই দশ দিনেও

মাসের দশ তারিখ কেটে গিয়েছে। অথচ বিকল সার্ভারের কারণে এখনও কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের পেনশন হাতে পাননি এ রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ গ্রাহক। ডিজিটাল-দড়িতে দেশের অর্থনীতির রথ গড়গড়িয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা নোট বাতিলের পর থেকে নিয়ম করে বলে চলেছে মোদী সরকার।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

মাসের দশ তারিখ কেটে গিয়েছে। অথচ বিকল সার্ভারের কারণে এখনও কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের পেনশন হাতে পাননি এ রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ গ্রাহক। ডিজিটাল-দড়িতে দেশের অর্থনীতির রথ গড়গড়িয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা নোট বাতিলের পর থেকে নিয়ম করে বলে চলেছে মোদী সরকার। অথচ উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির আগেই সেই লক্ষ্য ধাওয়া করার মাসুল গুনতে হচ্ছে পেনশন প্রাপকদের।

Advertisement

পিএফের আঞ্চলিক কমিশনার রাজীব ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘সার্ভারের সমস্যা ছিল। তাই মার্চে যথাসময়ে পেনশনের টাকা ব্যাঙ্কে পাঠানো যায়নি। আমরা সমস্যার সমাধান করেছি। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই পেনশন দিতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি।’’ উল্লেখ্য, মাসের শুরুর দিকেই রাজ্যে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পেনশন বিলি করে পিএফ দফতর।

পিএফ কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও অনেকে বলছেন, সার্ভারে যান্ত্রিক গোলোযোগ হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য যদি পেনশন দিতে ১০-১২ দিন গড়িয়ে যায়, তবে সেই পরিকাঠামোর ভরসায় ডিজিটাল পরিষেবার কথা কী ভাবে বলে কেন্দ্র?

Advertisement

হয়রান


রাজ্যে পিএফ গ্রাহক প্রায় ৩০ লক্ষ। পেনশন ৫ লক্ষ জনের


সার্ভার বিকল। দশ দিন পরেও পেনশন ঢোকেনি অ্যাকাউন্টে


সাইটে পাশবুক দেখাও বন্ধ


৩১ মার্চের মধ্যে দিতে হবে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট। অথচ নেট পরিষেবাই নেই অনেক জায়গায়


চোখের মণি স্ক্যান করে মেলানোর মেশিন নেই। হেনস্থা আধারের সঙ্গে আঙুলের ছাপ না মিললে। অনেক সময় বয়সের কারণে যা স্বাভাবিক

এই অভিযোগ আরও জোরদার হচ্ছে সার্ভার ঢেলে সাজার উদাহরণে। পিএফের ওয়েবসাইটে গিয়ে যে সমস্ত পরিষেবা পাওয়া যায়, গত এক মাস ধরে সেগুলি প্রায় বন্ধ। এমনিতে সদস্যরা সেখানে নিজেদের ‘ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর’ দিয়ে পিএফের যাবতীয় হিসেব-নিকেশ দেখতে পারেন। দেখা যায় পাশবুক। কিন্তু এক মাস ধরে সেই সুবিধা বন্ধ।

আঞ্চলিক পিএফ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এত দিন আঞ্চলিক সার্ভার ব্যবহার করে ওই পরিষেবা দেওয়া হত। কিন্তু কেন্দ্রীয় পিএফ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, অনলাইনে তথ্য জানানোর পরিষেবা পুরোটাই দেওয়া হবে দিল্লির কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে। তাই পুরো বিষয়টি ঢেলে সাজার কাজ চলছে। তা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত নেটে তথ্য জানানোর পরিষেবা ফের চালু করা সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে রাজীববাবু জানান, ‘‘আশা করছি মাস দু’য়েকের মধ্যে কেন্দ্রীয় সার্ভার চালু হবে।’’

আরও পড়ুন: ব্যাধি বড়, না কি পরীক্ষার বিধি

দু’ক্ষেত্রেই পিএফ কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু হয়রানিতে বিরক্ত এক পেনশনভোগী বলছিলেন, ‘‘এই পরিকাঠামোয় দেশকে ডিজিটাল করা তো ঘোড়ার আগে গাড়ি জুতে দেওয়ার সামিল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন