বন্ডের ইল্ড ভাল রকম বা়ড়ায় আশা ছিল, নতুন বছরের প্রথম থেকেই হয়তো স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ বাড়বে। তা কিন্তু হয়নি। তবে আরও এক দফা সুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এ বার সুদ বেড়েছে ১০-২৫ বেসিস পয়েন্ট। গত তিন মাসে স্টেট ব্যাঙ্ক এ নিয়ে চতুর্থ বার সুদ বাড়াল। ৫-১০ বছর মেয়াদে প্রবীণ নাগরিকরা এখন সুদ পাবেন ৭.২৫%। অন্যদের জন্য সর্বাধিক সুদ ৬.৭৫%।
সকলের মনেই এখন একটাই প্রশ্ন, নতুন অর্থবর্ষ কেমন যাবে। আগামী বছর দেশে সাধারণ নির্বাচন। এর ভালমন্দ প্রভাব থাকবে বাজারের উপর। প্রভাব থাকবে অস্থির বিশ্ব অর্থনীতি এবং রাজনীতির। দেশে উন্নয়ন সম্ভবত গতি পাবে ও তার ইতিবাচক প্রভাব থাকবে বাজারের উপর। দেখতে হবে এ বছর বর্ষা কেমন হয়, তা-ও। অর্থাৎ ধরে রাখতে হবে বাজারে অস্থিরতা থাকবে। এই অবস্থায় সবাইকে সজাগ থেকে সুযোগ নিতে হবে উত্থান-পতনের। মনে রাখতে হবে, ১ এপ্রিল থেকে চালু হয়েছে ইকুইটি ফান্ডের ডিভিডেন্ডের উপর ১০% কর, এবং ইকুইটি ফান্ড ও শেয়ার এক বছর ধরে রাখার পরে বিক্রি করে কোনও লাভ হলে তার উপরেও ১০% কর। অবশ্য প্রথম ১ লক্ষ টাকা লাভ থাকবে করের বাইরে।
বছরের শেষ দিকে বেশ কয়েকটি নতুন ইস্যু আশানুরূপ লগ্নি টানতে ব্যর্থ হলেও বন্ধন ব্যাঙ্ক চোখে পড়ার মতো ব্যতিক্রম। এতে এক দিকে যেমন আবেদন জমা পড়েছে প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ, অন্য দিকে তেমনই বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে ইস্যুর দামের তুলনায় ১০০ টাকা উপরে। ছোট লগ্নিকারীদের প্রত্যেকের ভাগ্যে জুটেছে কমপক্ষে ৪০টি শেয়ার। অর্থাৎ বছরের শেষে এঁদের প্রত্যেকেই কম করে ৪,০০০ টাকা লাভ করেছেন।
বাজারে মোট শেয়ার-মূল্য (মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন) অনুযায়ী বন্ধন এখন দেশের অষ্টম বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্ক বাদে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই এখন বন্ধনের পিছনে। আগে থাকা অন্য ছ’টিই বেসরকারি ব্যাঙ্ক।
ভালমন্দ মিশিয়ে কেটে গেল ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ। বছরের বেশির ভাগটা ভাল কাটলেও বড় রকম ধাক্কা এসেছে শেষের দিকে।
এ বছরেই সেনসেক্স ও নিফ্টি পৌঁছয় সর্বকালীন উচ্চতায়। এই উচ্চতা অবশ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। মূলত যে দু’টি কারণে বছরের শেষ দিকে সূচকের কমবেশি ১০ শতাংশ পতন ঘটে, সেগুলি হল:
• পিএনবি-কে ঘিরে নীরব মোদীর জালিয়াতি সামনে আসা
• মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে চড়া হারে আমদানি শুল্ক বসানোয় বিশ্ব জুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়া
এ দিকে, দাম বেশি ও বাজার খারাপ থাকায় চাহিদা তৈরি হয়নি আইসিআইসিআই সিকিউরিটিজ, ভারত ডায়নামিক্স ও হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স ইস্যুতে। কোনও রকমে উতরেছে লেমন ট্রি হোটেলস। অর্থাৎ এদের আবেদনকারীরা এখনই লাভের মুখ দেখতে পাবেন না। বরং কোনও কোনও শেয়ারে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে।
নতুন অর্থবর্ষের প্রথম ৬ মাসে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে কম ঋণ সংগ্রহ করবে কেন্দ্র। যে কারণে বছরের শেষে হঠাৎই বন্ডের ইল্ডে বড় মাপের পতন হয়। বাজারে বন্ডের জোগান কমলে দাম বাড়ে, ফলে কমে তার ইল্ড। ঠিক এটাই হয়েছে গত সপ্তাহে। এই ভাবে দাম বাড়ায় ন্যাভও বেড়েছে বিভিন্ন বন্ড ও ব্যালান্সড ফান্ডের। সম্ভবত বন্ডের ইল্ড পড়ার কারণেই ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে এই দফায় সুদ বাড়ানো হল না।