অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।—ফাইল চিত্র।
দুশ্চিন্তা ক্ষোভের ছিদ্র গলে ভোট কমার। তাই তা ঠেকাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকেও সেই ফাঁক মেরামতির উপায় খুঁজল কেন্দ্র।
সোমবার ওই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানালেন, কেন্দ্র চায় ঋণ বা নগদের অভাবে যাতে ছোট-মাঝারি শিল্পকে ভুগতে না হয়, তা নিশ্চিত করুক ব্যাঙ্কিং শিল্প। বিশেষত এগিয়ে আসুক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। অগ্রাধিকার দিক চাষিদের সময়ে ধার ও মসৃণ পরিষেবা দেওয়ায়। দেখা হোক ব্যাঙ্কের তরফে যাতে যথেষ্ট উৎসাহ পান ছোট ব্যবসায়ীরা। সকলের মাথায় ছাদের বন্দোবস্তকে পাখির চোখ করে জোর দেওয়া হোক গৃহঋণেও।
এ দিন আলোচনায় ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, বাজেটের ঠিক পরেই ৭ ফেব্রুয়ারি ঋণনীতি পর্যালোচনায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক যাতে শিল্প তথা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সুদ কমায়, সেই সওয়ালও করেছে কেন্দ্র।
নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালু— জোড়া ধাক্কায় বেজায় খাপ্পা ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প। ক্ষুব্ধ ছোট ব্যবসায়ীরা। জলের দরে কৃষিপণ্য বেচতে বাধ্য হওয়া বা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েও ফসল বিমার টাকা না পাওয়া— নানা কারণে ক্ষোভ উগরেছেন চাষিরাও। ভোটের মুখে যা কেন্দ্রের চিন্তার কারণ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তাই ‘ইনিংসের শেষ কয়েক ওভারে’ সকলের ক্ষতে মলম দেওয়ার মরিয়া চেষ্টায় নেমেছে সরকার।
মোদী সরকার চায় চাঙ্গা শিল্প ও অর্থনীতির ছবি তুলে ধরে ভোটে যেতে। অথচ শিল্প বৃদ্ধি তলানিতে। তাই এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সুদ কমানোরও সওয়াল করেছে তারা। যাতে লগ্নির খরচ কমে। বাড়ে চাহিদায়। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকায় শক্তিকান্তের জমানায় প্রথম ঋণনীতিতে তা হওয়া অসম্ভব নয় বলেও মনে করছেন অনেকে।
দ্রুত ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অযথা দুর্নীতির দায়ে পড়ার ভয়ে যাতে ব্যাঙ্ককর্তাদের ভুগতে না হয়, তার আশ্বাসও দিয়েছেন গয়াল। তাঁর দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে দুর্নীতিতে জড়ালে তদন্তের আতসকাচে পড়তেই হবে। কিন্তু শুধু বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তে ভুলের ক্ষেত্রে হেনস্থা হতে হবে না। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক-কাণ্ডের এফআইআরে ব্যাঙ্কিং শিল্পের বহু পরিচিত নামকে সিবিআই স্রেফ প্রসঙ্গ ক্রমে টেনে আনায় তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অরুণ জেটলি। তার পরে গয়ালের এই মন্তব্য তাই তাৎপর্যপূর্ণ।
দাসের সামনেও ব্যাঙ্কিং শিল্পের ছবি তুলে ধরেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্ণধাররা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তা অনুযায়ী, কেন্দ্র নতুন করে মূলধন জোগানোয় ও দেউলিয়া বিধির কারণে অনুৎপাদক সম্পদ কমছে। পরে একই ইঙ্গিত মিলেছে অর্থমন্ত্রীর কথায়। চাষি ও ছোট শিল্পকে আরও ঋণ জোগানোর কথা বলেছেন দাসও।