ঋণ দেওয়ার গলদ নিয়েই তোপ বিজেপির

দায় বাড়াবে নীরব ধাক্কা, কবুল ব্যাঙ্কের

বৈঠকে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি জানান, পিএনবি-র প্রতারণায় তাঁদেরও প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা ফেঁসে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৯
Share:

সতর্ক: মুম্বইয়ের পিএনবি শাখায় পুলিশ পাহারা। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে জালিয়াতির ধাক্কায় নতুন করে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা বাড়তে পারে। আজ কলকাতায় সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তারাই এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদদের প্রশ্নের মুখেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করে ফেলেন তাঁরা। আজ তাঁরা বিজেপি সাংসদদের তোপের মুখে পড়েন।

Advertisement

বৈঠকে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি জানান, পিএনবি-র প্রতারণায় তাঁদেরও প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা ফেঁসে গিয়েছে। কারণ পিএনবি থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নীরব মোদীরা যে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হাতিয়ে নিয়েছিলেন, তার ভিত্তিতে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হংকং শাখা প্রায় ৩৬ কোটি ৬৮ লক্ষ৭০ হাজার ডলার ঋণ দেয়। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ২৩০০ কোটি টাকার বেশি।

বৈঠকের শুরু থেকেই তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের কর্তাদের অনাদায়ী ঋণ বা অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। পিএনবি-র প্রতারণার প্রসঙ্গে তাঁরা প্রশ্ন করেন, এই ঋণ ফেরত না পেলে কী হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বন্ধ হচ্ছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, সিদ্ধান্ত রেলের

সূত্রের খবর, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর জবাব দেন, তাঁরা আশা করছেন, পিএনবি সবটাই মিটিয়ে দেবে। বাস্তবে অবশ্য পিএনবি কর্তৃপক্ষ পুরো দায় মানতে চাননি। তৃণমূলের সুখেন্দুশেখরবাবু জানতে চান, ‘‘টাকা শোধ না হলে কী হবে?’’ এলাহাবাদ ব্যাঙ্ককর্তা জবাব দেন, ফের এনপিএ বাড়বে।

শঙ্কা ব্যাঙ্কের

• নতুন করে বোঝা বাড়তে পারে অনুৎপাদক সম্পদের, পিএসি বৈঠকে মানলেন ব্যাঙ্ককর্তারা

• এখনই এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের এনপিএ-র ৮০% কর্পোরেট সংস্থার কাছে, বাকি ২০% ছোট-মাঝারি শিল্পে

• ইউবিআইয়ের ৯০% কর্পোরেটে, বাকি ১০% ছোট-মাঝারি সংস্থায়

বিজেপির পাল্টা

• নিশিকান্ত দুবে ও অনুরাগ ঠাকুরের তোপ, ত্রুটি রয়েছে ব্যাঙ্কের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থাতেই

• ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়, তির ব্যাঙ্কের দিকে

এতেই ঝাঁপিয়ে পড়েন বিজেপির দুই সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও অনুরাগ ঠাকুর। মোদী সরকার বারবার দাবি করেছে, তারা এসে ইউপিএ-আমলের এনপিএ-র বোঝা কমিয়েছে। অথচ মোদী জমানায় ফের এনপিএ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় তাঁরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ধার দেওয়ার ব্যবস্থার গলদ নিয়েই ক্ষোভ জানান। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে দুই সাংসদের তোপের মুখে পড়তে হয় ব্যাঙ্ককর্তাদের।

বৈঠকে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের কর্তা জানান, এনপিএ-র ৮০% পড়ে রয়েছে বড় কর্পোরেট সংস্থার কাছে। বাকি ২০ ভাগ ছোট-মাঝারি শিল্পে। ইউবিআই জানায়, ৯০ শতাংশই বড় কর্পোরেটের। সুদীপ ও সুখেন্দুবাবু জানতে চান, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে? কারণ শীর্ষ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা বলছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিধি মেনে পদক্ষেপ করতে হবে। ব্যাঙ্কের জবাবে অবশ্য কেউই সন্তুষ্ট হননি বলে সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement