Positive Pay

সব চেকেই ছবি মেলানো বাধ্যতামূলক করার আর্জি

‘পজিটিভ পে’ ব্যবস্থায় চেকের ছবি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের অ্যাপে দিতে হবে। অনেকের প্রশ্ন, এর জন্য স্মার্ট ফোন থাকতে হবে গ্রাহকের। ব্যবস্থাটি বাধ্যতামূলক হলে যাঁদের স্মার্ট ফোন নেই অথবা যাঁরা অ্যাপ ব্যবহারে সচ্ছন্দ নন, তাঁদের কি হবে?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রতারণা রুখতে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ‘পজ়িটিভ পে’ নামে একটি পদ্ধতি চালু হবে বলে বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যে ব্যবস্থায় চেক কেটে কাউকে দেওয়ার আগে, সেটির ছবি তুলে ব্যাঙ্ক-কে পাঠাতে হয়। সেই চেক ভাঙাতে গেলে ছবির সঙ্গে আসলটি মিলিয়ে দেখে ব্যাঙ্ক। দু’টি মিলে গেলে টাকা মেটানো হয়। শুক্রবার ব্যাঙ্ক কর্তাদের আর্জি, প্রতারণা রোখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী এই নিয়ম। ফলে প্রতিটি ব্যাঙ্কে যত শীঘ্র সম্ভব এটি বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ জারি হোক। তবে বিষয়টি বাধ্যতামূলক হলে আবার বহু গ্রাহকের অসুবিধা হতে পারে বলে মনে করছেন একাংশ।

Advertisement

‘পজিটিভ পে’ ব্যবস্থায় চেকের ছবি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের অ্যাপে দিতে হবে। অনেকের প্রশ্ন, এর জন্য স্মার্ট ফোন থাকতে হবে গ্রাহকের। ব্যবস্থাটি বাধ্যতামূলক হলে যাঁদের স্মার্ট ফোন নেই অথবা যাঁরা অ্যাপ ব্যবহারে সচ্ছন্দ নন, তাঁদের কি হবে?

ব্যাঙ্ক কর্তাদের দাবি, চেকের ছবি এবং আসল চেকের মধ্যে ফারাক ধরা পড়লে এই ব্যবস্থায় চেক ক্লিয়ারেন্স আটকে যায়। ফলে এটি গ্রাহকের সুরক্ষা বর্ম। এই ব্যবস্থা আনার কারণ হিসেবে যে সুরক্ষার কথা বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। তবে তারা জানিয়েছে, আপাতত ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের চেকের ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা আসবে। ব্যাঙ্কিং মহলের অবশ্য বক্তব্য, মানুষের কথা ভাবলে তার থেকে কম অঙ্কের চেকেও জরুরি এটি।

Advertisement

সিদ্ধান্ত

• যিনি চেক দিচ্ছেন, তিনি আগে সেটির ছবি তুলবেন।
• সেই ছবি আপলোড করবেন ব্যাঙ্কের অ্যাপে।
• এতে চেক যে জমা পড়বে, তা আগে থেকেই জানতে পারবে ব্যাঙ্ক।
• পরে চেক ভাঙাতে গেলে সেই ছবির সঙ্গে চেক মিলিয়ে দেখা হবে।
• কোনও গোলমাল থাকলে, তা তখনই ধরা পড়বে।
• প্রথমে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের চেকের ক্ষেত্রে চালু হবে এই ‘পজ়িটিভ পে’ ব্যবস্থা।

প্রশ্ন

• ব্যাঙ্কের গ্রাহকের স্মার্ট ফোন না-থাকলে কী হবে?
• স্মার্ট ফোন থাকলেও, অ্যাপ ব্যবহারে সচ্ছন্দ নন বহু গ্রাহক। এটি বাধ্যতামূলক হলে তাঁরা কী করবেন?

আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক আগেই সব অঙ্কের চেকের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা এনেছে। যদিও ওই ব্যাঙ্ক সূত্রের দাবি, এটি বাধ্যতামূলক নয়। যে সব গ্রাহক চেক প্রতারণা নিয়ে সাবধান হতে চান, তাঁরাই ইচ্ছে করলে ওই ব্যবস্থার সুযোগ নিতে পারেন।

বন্ধন ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “অনেক সময় কিছু অসাধু ব্যক্তি চেকের অঙ্ক বদলে বেশি টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। যাঁর নামে চেক কাটা হয়েছে, তা মুছে দিয়ে অন্য নাম বসিয়ে চেক ভাঙানো হয়। চেকবই হারিয়ে গেলে তার পাতা ব্যবহার করেও প্রতারণা ঘটে। পজ়িটিভ পে এগুলি আটকবে।’’

ইউকো ব্যাঙ্কের এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর অজয় ব্যাস বলেন, “পুরনো চেকের নম্বর দিয়ে নকল চেক বানিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। অনেক ব্যাঙ্কেই এখন দু’জায়গায় চেক নম্বর লেখার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। একটি ছাপার অক্ষরে। খালি চোখে দেখা যায়। ওই নম্বরই আর এক জায়গায় লেখা থাকে, যা খালি চোখে দেখা যায় না (ইনভিজ়িবল নম্বর)। ব্যাঙ্কের কর্মীরা বিশেষ পদ্ধতিতে তা দেখতে পান। তবে নতুন ব্যবস্থাটি দেশে আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার নিরাপত্তার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন