CNG Gas

চড়ছে সস্তার সিএনজি, কী করবে বণ্টনকারী 

গ্যাস ক্ষেত্রগুলি থেকে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বছরে দু’বার সংশোধন করে কেন্দ্র। এ মাসে পুরনো ক্ষেত্রগুলির গ্যাসের দাম প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটে ৬.১ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৮.৫৭ ডলার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ০৯:০৫
Share:

সিএনজি স্টেশন।

রান্নার গ্যাস থেকে গাড়ির তেল, জ্বালানির চড়া দরের ছেঁকায় অন্যান্য দেশের মতো ভারতের মানুষও নাজেহাল। বিকল্প হিসেবে যে জ্বালানি কিছুটা সস্তা ছিল, সেই প্রাকৃতিক গ্যাসের দরও এখন ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বেড়ে চলেছে তা থেকে উৎপাদিত রান্না, শিল্পোৎপাদন (পিএনজি) এবং পরিবহণ (সিএনজি) জ্বালানির দাম। তার প্রাথমিক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গেও।

Advertisement

এ রাজ্যে পিএনজির জোগান এখনও শুরু হয়নি। কিন্তু কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে সিএনজির জোগান ও বিক্রি চালু হয়েছে। সেই ব্যবসায় যুক্ত সংস্থাগুলির অন্যতম ইন্ডিয়ান অয়েল-আদানি গ্যাস (আইওএজি) সিএনজির দাম সম্প্রতি এক দফা বাড়িয়েছে। অন্য দুই সংস্থা হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসি) এবং বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসি) এখনও দর না বাড়ালেও তাদের পক্ষেও আর কত দিন আর্থিক বোঝা বহন করা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে সংশয়ী সংশ্লিষ্ট মহল। দাম সংশোধনের বিষয়টি অভ্যন্তরীণ বলে তিন সংস্থার কেউই মুখ খুলতে চায়নি। এইচপিসি বা বিজিসি এ নিয়ে আলোচনায় বসবে কি না, তা নিয়েও কোনওপ্রতিক্রিয়া মেলেনি।

গ্যাস ক্ষেত্রগুলি থেকে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বছরে দু’বার (এপ্রিল ও অক্টোবর) সংশোধন করে কেন্দ্র। এ মাসে পুরনো ক্ষেত্রগুলির গ্যাসের দাম প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটে ৬.১ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৮.৫৭ ডলার। নতুন ক্ষেত্রগুলির গ্যাস ৯.৯২ ডলার থেকে বেড়ে ১২.৬ ডলার হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামের পাশাপাশি, প্রাকৃতিক গ্যাসের দামও বেড়েছে। তার প্রভাবে ভারতেও তার দাম বেড়েছে প্রায় ৪০%।

Advertisement

গত এক বছরে সিএনজি এবং পিএনজির দাম ভারতে ৭০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। শিল্পমহল সূত্রের খবর, গত ১ জানুয়ারি এইচপিসির নদিয়া ও হুগলির পাম্পে প্রতি কিলোগ্রাম সিএনজির দাম ছিল যথাক্রমে ৬৮.৫ এবং ৬৯.৫ টাকা। এখন তা ৯৫ টাকা। বছরের শুরুতে বিজিসির পাম্পগুলিতে জ্বালানিটির দাম ৬৭.৬৭ টাকা ছিল। তা বাড়তে বাড়তে ৮৯.২৫ টাকায় পৌঁছেছে। এরই পাশাপাশি, বর্ধমানে আইওএজির পাম্পে সিএনজির দাম গত ১ জানুয়ারি ৭৮ টাকা ছিল। এ মাসে কিছু দিন পর্যন্ত তা ছিল ৯১ টাকা। সংস্থার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সম্প্রতি তা ফের বেড়ে ৯৪ টাকা হয়েছে।

গাড়ির জ্বালানি হিসেবে পেট্রল-ডিজ়েলের তুলনায় সিএনজি বরাবরই সস্তা। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম দ্রুত মাথা তোলায় দামের সেই ব্যবধান কমেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিল উদ্বিগ্ন গাড়ি শিল্পমহল।

সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, অদূর ভবিষ্যতে এইচপিসি এবং বিজিসির দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। কারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেলের গ্যাস জোগানোর মূল পাইপলাইন এখনও তৈরি না হওয়ায় ট্রাকে বড় সিলিন্ডারে করে (কাসকেড) গ্যাস আনতে হচ্ছে তিন বণ্টনকারী সংস্থাকে। ফলে এমনিতেই সংস্থাগুলি কার্যত লোকসান করে পাম্পে সিএনজি বিক্রি করছে। গ্যাস কেনার খরচ আরও বাড়ায় সম্প্রতি আর্থিক চাপ আরও বেড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন