সওয়াল জেটলির

বেসরকারি বিনিয়োগের পথ করতে ব্যাঙ্ক-কে আর্জি কেন্দ্রের

অনাদায়ী ঋণের চাপে বেশ কিছু দিন ধরেই জেরবার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। এই খাতে তাদের ঘাড়ে অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝা চাপলেও বেসরকারি শিল্পে ঋণ বাড়াতে ব্যাঙ্কগুলির দ্বারস্থ হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুরুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

অনাদায়ী ঋণের চাপে বেশ কিছু দিন ধরেই জেরবার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। এই খাতে তাদের ঘাড়ে অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝা চাপলেও বেসরকারি শিল্পে ঋণ বাড়াতে ব্যাঙ্কগুলির দ্বারস্থ হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তবে সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, বকেয়া ঋণ নিয়ে যে-সব মামলা ঝুলে রয়েছে, সেগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির উপর জোর দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, ঋণ-খেলাপিদের ধার শোধ করার সুযোগ দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, তাদের ‘অস্বাভাবিক বাড়তি সময়’ দেওয়া হবে।

Advertisement

শনিবার এখানে অর্থ মন্ত্রক আয়োজিত ঋণ আদায় সংক্রান্ত এক আলোচনাসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে বেসরকারি লগ্নির কোনও বিকল্প নেই। তবে সেই বিনিয়োগের চাবিকাঠি ব্যাঙ্কের হাতেই রয়েছে। কারণ, তাঁর মতে, ‘‘বেসরকারি ক্ষেত্রের ডানা মেলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন বাড়তি তহবিল, যা আরও বেশি পরিমাণ ব্যাঙ্কঋণ না-মিললে সম্ভব নয়।’’ বেসরকারি ক্ষেত্র, বিশেষ করে উৎপাদন শিল্পের হাল ফেরাতে তাই ব্যাঙ্কগুলিই অন্যতম চালিকাশক্তি বলে মন্তব্য করেন জেটলি।

জেটলি উল্লেখ করেন, গত কয়েক বছরে ব্যাঙ্কঋণ বেড়েছে ঢিমেতালে। তার কারণ, ঋণ আদায় হয়েছে ধীরগতিতে। ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে চেপেছে বিপুল বকেয়া ঋণের বোঝা। একই সঙ্গে জেটলি জানান, দেশে ঋণ আদায় সংক্রান্ত বিভিন্ন ট্রাইবুনালে ঝুলে রয়েছে প্রায় ৯৫ হাজারটি মামলা, যেগুলিতে ৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বকেয়া ঋণের প্রশ্ন জড়িত। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি চান না খেলাপিদের ঋণ শোধের মেয়াদ অস্বাভাবিক লম্বা করার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ ঋণশোধ পিছিয়ে দেওয়ার এত বেশি সুযোগ থাকলে মামলার পাহাড় জমবে।

Advertisement

এ ব্যাপারে কেন্দ্রের দায়িত্বের ব্যাপারেও নতুন অঙ্গীকার করেছেন জেটলি। তিনি বলেন, ‘‘সরকারকে পুরো ব্যবস্থায় দক্ষতা বাড়াতে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের হাতে ঋণ আদায়ের বাড়তি ক্ষমতাও দিতে হবে।’’ ব্যাঙ্কগুলি যাতে তাদের ঋণ আদায় ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে পারে, তার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কও নীতিগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী অগস্টেও সরাসরি ০.৭% কমেছে শিল্পোৎপাদন। জুলাইয়ে তা কমেছিল ২.৫%। মূলত কল-কারখানার উৎপাদন কমার জেরেই হাল ফিরছে না শিল্পের। চলতি ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে অগস্ট— এই পাঁচ মাসের ছবিটাও উজ্জ্বল নয়। এই সময়ে শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমেছে ০.৩%। ২০১৫ সালের একই সময়ে তা বেড়েছিল ৪.১% হারে।

আর্থিক সংস্কারের হাত ধরে বিদেশি লগ্নির দরজা কেন্দ্র আরও বেশি করে খুলে দেওয়ায় সেই পথে যথেষ্ট লগ্নি এ দেশে আসছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন জেটলি। তাঁর দাবি, ‘‘বিশ্বের যে-কোনও দেশের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতে তাঁদের লগ্নির উপর বাড়তি লাভ ঘরে তুলছেন। সরকারি লগ্নিও যথেষ্ট ভাল।’’ এই মুহূর্তে দেশে বেসরকারি লগ্নিকে টেনে তোলাই কেন্দ্রের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য জেটলির।

বাড়তি ঋণ ছাড়া গতি নেই শিল্পের
অনুৎপাদক সম্পদের চাপে ব্যাঙ্কঋণ বাড়ছে ঢিমেতালে
ধার শোধ করায় অহেতুক বাড়তি সময় নয় ঋণ-খেলাপিদের
ঋণ আদায়ে ব্যাঙ্কের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দিতে উদ্যোগ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন