বাজেটে কাজের দিশা কই, প্রশ্ন শিল্পের

সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট বিক্রম কির্লোস্কর, ফিকির প্রেসিডেন্ট সন্দীপ সোমানি, বেঙ্গল চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রজিৎ সেনের পাশাপাশি অনাবাসী ভারতীয় শিল্পমহলের অনেকেই  বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০২:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুক্রবার তাঁর প্রথম বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতির বহর ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে একাধিক দাওয়াইয়ের কথা বলেছেন তিনি। তাতে মোটের উপর সন্তোষ জানালেও একই সঙ্গে শিল্পমহল ও অর্থনীতিবিদদের অনেকেরই প্রশ্ন, আর্থিক বৃদ্ধির উচ্চ হার ছোঁয়া বা কাজের সুযোগ তৈরির দিশা কই? আর্থিক সমীক্ষায় বেসরকারি লগ্নির কথা বলা হলেও তার পথ কতটা মসৃণ হল? উৎপাদন ও চাহিদার যে শ্লথ গতি তৈরি হয়েছে, বাজেটের দাওয়াইতে সেই দুষ্ট চক্রও সহজে ভাঙবে কি না নিশ্চিত নন তাঁরা।

Advertisement

সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট বিক্রম কির্লোস্কর, ফিকির প্রেসিডেন্ট সন্দীপ সোমানি, বেঙ্গল চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রজিৎ সেনের পাশাপাশি অনাবাসী ভারতীয় শিল্পমহলের অনেকেই বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছেন। সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৭০ হাজার কোটি টাকা মূলধন জোগানের ভাবনা ব্যাঙ্ক ও শিল্পমহলকে আস্থা দেবে। সোমানির মতে, বাজেটে অধিকাংশ ক্ষেত্রকেই উৎসাহ দেওয়ার মতো রসদ রয়েছে।

ওই সাফল্য এলে তা আশাব্যঞ্জক মনে করেন আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায়। তাঁর বক্তব্য, বাজেটে আগের সরকারের প্রকল্পের ধারাবাহিকতারই ইঙ্গিত রয়েছে। তবে ৫ লক্ষ কোটি অর্থনীতিতে পৌঁছতে হলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমপক্ষে ৮% হতে হবে। কিন্তু আগের বছর ও এ বছর তা তার চেয়ে অনেক কম থাকায় আগামী দিনে সেই ঘাটতি পূরণে বৃদ্ধির হার অন্তত ৮.৫% হওয়া জরুরি হলেও কী ভাবে সম্ভব, বাজেটে তা স্পষ্ট নয় বলেই মত তাঁর।

Advertisement

প্রবীণ শিল্পপতি আদি গোদরেজ স্পষ্টই বলেছেন, বাজেট বৃদ্ধির দিকে নজর রেখে তৈরি হয়নি। মহিন্দ্রা হলিডে’জ-এর চেয়ারম্যান অরুণ নন্দার দাবি, বাজেটে কর্মসংস্থানের দিশা নেই।

প্রায় একই সুর সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়েরও। তাঁর প্রশ্ন মানুষ জানতে জানতে চায়, অর্থনীতি চাঙ্গা হবে? চাকরি তৈরি হবে? ঠিকমতো ফসলের দাম মিলবে? তাঁর মতে, সেগুলির স্পষ্ট দিশা এ দিন মেলেনি।

বেসরকারি লগ্নি নিয়েও খুব একটা নিশ্চিত নন দীপঙ্করবাবু। তিনি জানান, রাষ্ট্রপুঞ্জের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ভারতে ৪০০০ কোটি ডলারের বিদেশি লগ্নি এলেও ভারত থেকে বিদেশে লগ্নি হয়েছে প্রায় ১১৩০ কোটি ডলার। বাইরে লগ্নি চলে যাওয়া আটকানো জরুরি বলে তাঁর মত। পাশাপাশি দেশে চাহিদা বৃদ্ধির দিশাও খুব একটা পাননি তাঁরা।

ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট সীতারাম শর্মাও বলেছেন, কর্মসংস্থান বাড়াতে নতুন লগ্নিকে উৎসাহিত করার মতো বাজেটে কার্যত নতুন কোনও পদক্ষেপ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘উচ্চ আর্থিক বৃদ্ধির কথা বলা হলেও ভোগ, বিনিয়োগ ও সঞ্চয় বৃদ্ধির মতো জাতীয় আয়ের মূল কাঠামোকে উৎসাহিত করার কোনও সার্বিক কৌশল

বাজেটে নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন