মেঘ না-চাইতেই জল। শিল্পমহল ও কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানোর। কিন্তু রঘুরাম রাজন প্রত্যাশা ছাপিয়ে এক ধাক্কায় সুদ ছাঁটাই করলেন ৫০ বেসিস পয়েন্ট।
মঙ্গলবার ঋণনীতি ফিরে দেখতে বসে রেপো রেট (যে-হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ নেয়) গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি হারে কমালেন আরবিআই গভর্নর। ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমে তা নেমে এল ৬.৭৫ শতাংশে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এর জেরে ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার কমালে শিল্পের ঋণের খরচ কমবে। ফলে প্রাণ ফিরবে শিল্পে, যার প্রভাব পড়বে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির উপর। পাশাপাশি, সুদ কমবে গাড়ি-বাড়ি ঋণে। ফলে সাধারণ মানুষও স্বস্তি পাবেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ইতিমধ্যেই সুদ কমানোর কতা ঘোষণা করেছে দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাঙ্ক এসবিআই। তারা ঋণে ন্যূনতম সুদ ৪০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে করেছে ৯.৩ শতাংশ, যা কার্যকর হবে ৫ অক্টোবর থেকে। এর জেরে আরও অনেক ব্যাঙ্কই একই পথে হাঁটবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
রাজনের দাওয়াই আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করবে এই আশাই করছে নির্মাণ শিল্প মহলও। নির্মাণ শিল্প বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির বৈজাল এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘ এই মুহূর্ত্তে নির্মাণ শিল্পমহলের এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। চূড়ান্ত চাপে রয়েছে এই শিল্প। বিক্রি কমেছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। একই হারে কমেছে নতুন প্রকল্পের সংখ্যা। সব মিলিয়ে এ বছর ১২৫ পয়েন্ট রেপো রেট কমানো দরকার। সেই পথেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হাঁটছে বলে আমরা মনে করি।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি মনে করেন এই সিদ্ধান্তের ফল হিসেবে দ্রুত গ্রাহকদের হাতে কম সুদের হারের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। সেই প্রক্রিয়া কার্যকর হলেই আবাসন শিল্পে চাহিদা বাড়বে। বাজারও উঠবে।
একই সুরে আরেক রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞ সংস্থা কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ডস, ইন্ডিয়া-র প্রধান সঞ্জয় দত্ত জানান, এই পদক্ষেপ সার্বিক ভাবে বাজার চাঙ্গা করবে। তিনি বলেন, ‘‘সুদের হার কমলে নির্মাণ সংস্থা ও ক্রেতা, দু’ পক্ষই লাভবান হবেন। তবে ব্যাঙ্কগুলি এই সুবিধা গ্রাহকদের দেওয়ার পরেই বাজার চাঙ্গা হবে। সেই প্রক্রিয়া ঢিমেতালে চললে, বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াও শ্লথ হবে।’’
পড়ুন: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতেই লাফ সূচকের
কমবে গাড়ি ঋণের খরচ, আশা শিল্পের