এক দিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়। আর অন্য দিকে ভারতে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা। এই দুইয়ের সাড়াশি চাপে বুধবার দিনভর টালমাটাল ছিল শেয়ার বাজার। এবং সেটা এতটাই যে, সারা দিনে ১,১৫১ পয়েন্টেরও বেশি ওঠা-নামা করেছে সেনসেক্স। একই তালে পেন্ডুলামের মতো দুলেছে নিফ্টিও।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এই তীব্র অনিশ্চয়তার জন্য বড় নোটের তুলে নেওয়ার খানিকটা হাত থাকলেও, মূল ধাক্কাটা দিয়েছে মার্কিন মুলুকের নির্বাচনের ফলই। যেখানে সারা দুনিয়াকে চমকে দিয়ে প্রেসিডেন্টের কুর্শি গিয়েছে ট্রাম্পের দখলে।
এ দিন বাজার খোলার আগেই প্রেসিডেন্ট পদ দখলের দৌড়ে ট্রাম্পের এগিয়ে থাকার খবর এসে যায়। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সেনসেক্স আগের দিনের থেকে ১,৬৮৯ পয়েন্ট নীচে নেমে আসে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে উঠতে থাকে বাজার। লেনদেন বন্ধ হওয়ার সময় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকটি থিতু হয় ২৭,২৫২.৫৩ অঙ্কে। যা আগের দিনের থেকে ৩৩৮.৬১ পয়েন্ট কম। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টি-ও আগের দিনের তুলনায় ১১১.৫৫ পয়েন্ট পড়ে এসে দাঁড়ায় ৮,৪৩২ অঙ্কে।
এ দিন শেয়ার বাজারে দামের দ্রুত ওঠা-পড়া মূলত লগ্নিকারীদের মধ্যে ছড়ানো তীব্র আতঙ্কেরই ফল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রধান কারণ ট্রাম্প ভারতের মতো দেশ থেকে আউটসোর্সিংয়ের বিরোধী। যার প্রভাব এ দেশের বিশেষত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির উপর গভীর ভাবে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ এবং ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, ‘‘আমেরিকার নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে বাজারে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে, এটা আমাদের সকলেরই জানা ছিল। তবে আমার মনে হয় এই ধাক্কা সূচক খুব শীঘ্রই সামলে উঠবে। ট্রাম্পের পক্ষে ভারতের এই বিশাল বাজার উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আশা করি তিনি এমন কিছু করবেন না, যা এ দেশের অর্থনীতিকে আঘাত করবে।’’
তবে বাজার যে ঘুরে দাঁড়াবে, তার ইঙ্গিত এই দিনই পাওয়া গিয়েছে। লেনদেনের শুরুতে হু হু করে শেয়ারের দাম পড়তে থাকলে অনেকেই তা কিনতে নেমে পড়েন। যার জেরে সূচকও ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং বাজার বন্ধ হওযার আগেই ১,১৫১ পয়েন্ট ঘাটতি পূরণ করে ফেলে।