মাসুল হার নিয়ে রিলায়্যান্স জিও-র সঙ্গে গোড়ায় গোল বেধেছিল ভোডাফোন, এয়ারটেল ও আইডিয়ার মতো পুরনো সংস্থাগুলির। এ বার সংযোগ ব্যবহারের খরচ বা ‘ইন্টারকানেক্ট ইউসেজ চার্জ’ (আই ইউ সি) নিয়ে ফের যুযুধান দু’পক্ষ। এক সংস্থার পরিষেবা থেকে অন্য সংস্থার সংযোগ ব্যবস্থায় ফোন করতে প্রথম সংস্থা পরেরটিকে ওই চার্জ দেয়। জিও ওই চার্জ তোলার পক্ষপাতী হলেও পুরনো সংস্থাগুলির দাবি, পরিকাঠামো নির্মাণের খরচ মেটাতে ওই চার্জ চালু রাখা দরকার। না-হলে প্রতিযোগিতার বাজারে বাড়তি সুবিধা পাবে জিও।
গত বছর জিও নিখরচায় গ্রাহক পরিষেবা চালু করার পরেই এই শিল্পে বিতর্কের সূত্রপাত। তাতে জিও আপত্তির কিছু না-দেখলেও পুরনো সংস্থাগুলির অভিযোগ ছিল, প্রতিযোগিতার নিয়ম ভেঙে গ্রাহক টানতে লাগামছাড়া সুবিধা দিচ্ছে জিও। এ বার আইইউসি তুলে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই-এর সভাতেও যুযুধান দু’পক্ষ।
আইইউসি-র বদলে সেখানে ‘বিল অ্যান্ড কিপ’ পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব নিয়ে কথা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, যে-সংস্থার পরিষেবায় ফোন করা হবে, সেই ‘ইনকামিং কল’-এর হিসেব রাখবে শুধু দ্বিতীয় সংস্থাটি। কিন্তু তারা প্রথম সংস্থার কাছ থেকে কোনও ‘চার্জ’ নেবে না। পুরনো সংস্থাগুলির দাবি, গ্রামীণ এলাকার পরিকাঠামো নির্মাণে বিপুল লগ্নির জন্য আইইউসি-র উপর নির্ভর করতেই হয় টেলি সংস্থাগুলিকে। ট্রাই-এর রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল। তাই তা প্রত্যাহার করলে বা কমালে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটবে।
জিও মুখপাত্রের পাল্টা দাবি, এই চার্জ নিয়ে বাড়তি আয় করছে পুরনো সংস্থাগুলি। তিনি জানান, সেটি তুলে দিলেও তাঁরা এ বছরের শেষে দেশের ৯৯% এলাকায় পৌঁছে যাবেন।
পরে এক বিবৃতিতে এয়ারটেলের কর্তা রবি গাঁধীর দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে জিও-র বাড়তি আয়ের অভিযোগ ঠিক নয়। ট্রাই মিনিট প্রতি ওই চার্জ ১৪ পয়সায় স্থির করলেও আদপে খরচ ৩৫ পয়সা। আর কম আইইউসি নেওয়ায় জিও থেকে এয়ারটেলে আসা ফোনের জন্য মিনিটে ২১ পয়সা হিসেবে প্রতি ত্রৈমাসিকে এয়ারটেলের ক্ষতি হচ্ছে ৫৫০ কোটি টাকা। বস্তুত, তাঁর অভিযোগ ওই চার্জ তুলে দিলে জিও বাজারে একচেটিয়া সুবিধা পাওয়ার কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে।