অনুৎপাদক সম্পদে লাগাম পরাতে এ বার আলাদা এমডি স্টেট ব্যাঙ্কে

এই মুহূর্তে ব্যাঙ্ক শিল্পে সব থেকে বড় সমস্যা অনুৎপাদক সম্পদ। যার আঁচ থেকে রেহাই পায়নি স্টেট ব্যাঙ্কও, যদিও গত ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে দেশের বৃহত্তম ওই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কটির আর্থিক ফলাফল বেশ উৎসাহজনক। আগের বারের থেকে কমেছে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝাও। কিন্তু এ নিয়ে এখনও কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। তাই বিষয়টি দেখাশোনা করার জন্য এক জন ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষ। খুব শীঘ্রই নিযুক্ত হবেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০২:৪৪
Share:

ফল প্রকাশে অরুন্ধতী ভট্টাচার্য।—নিজস্ব চিত্র।

এই মুহূর্তে ব্যাঙ্ক শিল্পে সব থেকে বড় সমস্যা অনুৎপাদক সম্পদ। যার আঁচ থেকে রেহাই পায়নি স্টেট ব্যাঙ্কও, যদিও গত ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে দেশের বৃহত্তম ওই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কটির আর্থিক ফলাফল বেশ উৎসাহজনক। আগের বারের থেকে কমেছে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝাও। কিন্তু এ নিয়ে এখনও কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। তাই বিষয়টি দেখাশোনা করার জন্য এক জন ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষ। খুব শীঘ্রই নিযুক্ত হবেন তিনি।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতায় স্টেট ব্যাঙ্কের আর্থিক ফলাফল ঘোষণা করতে গিয়ে চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য জানান, গত অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০১৪-’১৫ সালে তাঁদের নিট মুনাফা আগের বারের থেকে ২০.৩০% বেড়ে ১৩,১০২ কোটি টাকা হলেও ওই বছর নতুন করে অনুৎপাদক সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে ২৯,৪৪৪ কোটি টাকার। তবে তা সত্ত্বেও মোট ঋণের তুলনায় অনুৎপাদক সম্পদের হার আগের বারের থেকে ৭০ বেসিস পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪.২৫%। নিট হিসাবে তা ৪৫ বেসিস পয়েন্ট কমে হয়েছে ২.১২%। ব্যাঙ্কিং শিল্পের যা হাল, সেখানে তা প্রশংসার দাবি রাখে। গত আর্থিক বছরে ৯১২৪ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ আদায়ও করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এ ছাড়া, তারা অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানির কাছে ১২,৪৭৮ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ বিক্রি করেছে।

অরুন্ধতীদেবী অনুৎপাদক সম্পদের প্রধান উৎস হিসাবে তিনটি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করেছেন: নির্মাণ, বিদ্যুৎ এবং ইস্পাত শিল্প। ওই সব ক্ষেত্রে দেওয়া ঋণ পুনরুদ্ধার নিয়েই নানা সমস্যা রয়েছে।’’

Advertisement

এ দিকে গত অর্থবর্ষে স্টেট ব্যাঙ্ক সুদ এবং অন্য খাতে আয়, ঋণ অবং আমানত সংগ্রহ-সহ ব্যাঙ্কিং ব্যবসার বিভিন্ন দিকেও ভাল ফলাফল করেছে। এ বার যখন অধিকাংশ ব্যাঙ্কেরই বড় শিল্প ও বাণিজ্যিক (কর্পোরেট) সংস্থায় ঋণের পরিমাণ কমেছে, সেখানে স্টেট ব্যাঙ্কের বড় শিল্পে ঋণ আগের বারের থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তাদের কর্পোরেট ঋণ আগের বারের থেকে ১১.৯৭% বেড়ে হয়েছে ২,৭১,৭৭৮ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে স্টেট ব্যাঙ্কের মোট ঋণের পরিমাণ আগের বারের থেকে ৭.২৫% বেড়ে হয়েছে ১৩,৩৫,৪২৪ কোটি টাকা। মোট আমানত ১৩.০৮% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫,৭৬,৭৯৩ কোটি।

অরুন্ধতীদেবী বলেন, ‘‘চলতি ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে আমরা দুটি বিষয়ে বিশেষ জোর দেব। অনুৎপাদক সম্পদ বৃদ্ধি রোখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঋণ ছাড়া অন্য খাতে আয় বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন ব্যবসার সন্ধান।’’ অরুন্ধতীদেবী বলেন, ‘‘আশা করছি, চলতি অর্থবর্ষে ঋণের পরিমাণ ১৪ শতাংশের মতো বাড়ানো যাবে।’’

এ দিকে স্টেট ব্যাঙ্কের ফলাফলের ইতিবাচক প্রভাব সংস্থার শেয়ার দরে পড়বে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিন বাজার বন্ধের মুখে ফল বেরোয়। যা জানার পরই ব্যাঙ্কের শেয়ার দর ৫% বেড়ে যায়। পরে অবশ্য মুনাফা তুলতে শেয়ার বিক্রির জেরে দামও কমে আসে। তবে ক্যালকাটা স্টক এরক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, ‘‘আগামী সোমবার এর প্রভাব সংস্থার শেয়ারের দামে পড়বে বলে মনে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন