প্রতীকী ছবি।
চলতি মাসের পয়লা তারিখ থেকেই মেয়াদি আমানতে সুদ ফের ছাঁটাই করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে তা দাঁড়িয়েছে ৬%। আর প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তা সামান্য বেশি— ৬.৫%। কিন্তু সাধারণ মানুষ, বিশেষত সুদনির্ভর প্রবীণরা বলছেন, গত তিন বছরে সুদ যে ভাবে নাগাড়ে কমেছে, তাতে সংসার চালানোই ক্রমশ দায় হয়ে উঠছে তাঁদের। এই একই ছবি অন্য প্রায় সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতেও।
হিসেব বলছে, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরেও দু’বছরের বেশি কিন্তু তিন বছরের কম মেয়াদি আমানতে (এক কোটি টাকার কম) স্টেট ব্যাঙ্কে সুদ মিলত ৯%। প্রবীণরা পেতেন ৯.৫%। সেখানে গত তিন বছরে কমতে-কমতে ওই দুই হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬% ও ৬.৫%। অনেকের আশঙ্কা, আগামী দিনে তা কমতে পারে আরও। এবং এটি স্রেফ উদাহরণ মাত্র। এ ভাবে সুদ কমেছে প্রায় সমস্ত মেয়াদের জমাতেই।
অবসরের সময়ে পাওয়া থোক টাকা ব্যাঙ্কে রেখে সংসার চালানো অনেকের অভিযোগ, তিন বছরে জমায় সুদ থেকে আয় কমে গিয়েছে মাসে প্রায় ৭,৫০০ টাকা। অথচ সেখানে জিনিসপত্রের দাম, চিকিৎসার খরচ ইত্যাদি বেড়েছে লাফিয়ে। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এ ভাবে সংসার চালাই কী করে বলুন তো?’’
তবে ব্যাঙ্কগুলির দাবি, এ ক্ষেত্রে তাদেরও হাত-পা বাঁধা। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে মুনাফার দিকে নজর দিতেই হয়। তা ছাড়া দেখতে হয়, সুদ বাবদ আয় ও ব্যয়ের ফারাকের বিষয়টি।
যেমন স্টেট ব্যাঙ্কের ডেপুটি এমডি নীরজ ব্যাস বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্যাঙ্কের মতো আমাদেরও ‘অ্যাসেট-লায়াবিলিটি কমিটি’ আছে। তারা ব্যাঙ্কের সুদ বাবদ আয় ও ব্যয় খতিয়ে দেখে সুদের হার বাড়ানো-কমানোর বিষয়ে সুপারিশ করে। সেই অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।’’
কিন্তু এই শক্ত হিসেব সাধারণ মানুষের বোঝার কথা নয়। বিশেষত সুদনির্ভর অনেকের অভিযোগ, দেশে বারবার ঋণে সুদ কমানোর দাবি ওঠে। যাতে শিল্পের ঋণ নিতে সুবিধা হয়। চাঙ্গা হয় চাহিদা। কিন্তু তার উল্টো পিঠ হিসেবে জমাতেও সুদ কমলে, ভোগান্তি পোহাতে হয় তাঁদেরই।