অনুৎপাদক সম্পদ আদায়ে দেউলিয়া আইন সংক্রান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক বিজ্ঞপ্তি সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হতেই বকেয়া ঋণ উদ্ধার নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল আগামী দিনে দেউলিয়া বিধি কার্যকরের পরিসর নিয়েও। এই প্রেক্ষিতে দেউলিয়া বিধি পর্ষদের প্রধান এম এস সাহুর দাবি, ওই রায় ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির দেউলিয়া আইনের আওতায় অনুৎপাদক সম্পদ উদ্ধারের অধিকারকে কোনও ভাবেই খর্ব করেনি। বরং তা বিধিটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তাদের এ বার আরও দায়িত্ববান করবে। পরিবর্তন আনবে ঋণদাতাদের আচরণেও। ঠিক যে ভাবে দেউলিয়া বিধি বদল এনেছে ঋণগ্রহীতাদের মনোভাবে। ধার বাকি ফেলা নিয়ে অনেক বেশি সতর্ক করেছে তাদের।
সাহুর দাবি, শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশের ফলে এ বার ব্যাঙ্ক-সহ ঋণদাতারা নিজেরাই খতিয়ে দেখতে পারবে ধার বকেয়া ফেলার কোন ঘটনায় তাদের দেউলিয়া বিধি প্রয়োগ করা যুক্তিযুক্ত, কোনটিতে নয়।
গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, ২,০০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট সময় পরে দেউলিয়া আইনে এনসিএলটি যেতেই হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। যাতে অনাদায়ি ঋণ আদায় করা যায়। অসাংবিধানিক অ্যাখ্যা দিয়ে সম্প্রতি এই বিজ্ঞপ্তিটিই বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বলেছে, সব খেলাপিদের একই মাপকাঠিতে বিচার করা ঠিক নয়। বরং প্রতিটি ঘটনা আলাদা ভাবে বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রের সায় নেওয়ার পরে ওই বিধি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সাহু বলেন, দেউলিয়া বিধি আসার পরে ঋণগ্রহীতাদের মনোভাব কিছুটা বদলেছে। প্রোমোটারদের ভয় ধরেছে, ধার শোধে গুরুত্ব না দিলে সংস্থাটাই শেষে হাতছাড়া হতে পারে। এ বার বিধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সতর্ক করবে ঋণদাতাদেরও। কারা ইচ্ছে করে ঋণ শোধ করছে না, আর কারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে তা করতে পারছে না, সেটা বিচার করার দায়িত্ব বোধ তৈরি হবে তাদের মধ্যে। আর দু’পক্ষের এই মনোভাবে বদলের ফলেই অর্থনীতির উপর থেকে অনুৎপাদক সম্পদের চাপ হালকা হবে বলে মনে করেন তিনি।